ফেল করা ৬০ জনকে ভর্তি করতে রাবি প্রশাসনের কাণ্ড

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পোষ্য কোটায় ন্যূন্তম পাস নম্বর কমিয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি উপ-কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এদিন বিকেলে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে।  

তিনি বলেন, পোষ্য কোটায় আসন ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে ন্যূনতম পাস নম্বর কমিয়ে ৩০ করা হয়েছে। কেননা হিসেব অনুসারে এই কোটায় ২০১ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ রয়েছে। কিন্তু পাস নম্বর ৪০ থাকায় ভর্তির সুযোগ পেয়েছে মাত্র ৬৭ জন। এখন পাস নম্বর কমানোর ফলে আরও ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু এখনো ৭৪টি আসন ফাঁকাই থাকবে। 

সভা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর রাবিতে পোষ্য কোটায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য মোট আসনের ৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকে। যেখানে নূন্যতম পাস নম্বর পেলেই ভর্তির সুযোগ পায় তারা।

এ বছর ন্যূনতম পাস নম্বর ৪০ থাকার কারণে সেই কোটায় অধিকাংশ আসন ফাঁকাই থাকছে। তাই আসন পূর্ণ করার জন্যই নম্বর কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পরবর্তীতে এই কোটায় ৩ শতাংশ আসন বরাদ্দের পাশাপাশি নূন্যতম পাশ নম্বর না রাখার প্রস্তাব দিয়েছে অধিকাংশ সদস্য। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রাবির বিভিন্ন ইউনিটে কোটাসহ চার হাজার ৬৪৬ আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় দিয়েছে দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থী। ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর ছিল ৪০। বিভিন্ন ইউনিটে আসন ফাঁকা থাকায় সর্বশেষ ৮ নভেম্বর পর্যন্ত ভর্তির শেষ সময় ছিল।

আরো পড়ুন: রাবির পরীক্ষায় ফেল, তবুও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন ৬০ জন

কিন্তু সভায় এই সময়সীমা বাড়িয়ে ২৪ নভেম্ব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ডীনরা বলছেন, বিভিন্ন ইউনিটে এখনো আসন ফাঁকা রয়েছে প্রায় ৭০টি। যার মধ্যে এ-ইউনিটে প্রায় ৩০টি এবং সি-ইউনিটে প্রায় ৪০টি। তাই আসন ফাঁকা থাকায় ভর্তির সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এদিকে নম্বর কমিয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা হানিকর। যে শিক্ষার্থী ন্যূনতম নম্বর পেয়ে পাস করতে পারে না, তাকে ভর্তির সুযোগ দেয়া নিতান্তই অমূলক। এটা কেবল একটি নির্দিষ্ট স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এই সিদ্ধান্ত।

কেননা এরাই পরবর্তীতে বিভিন্ন লিংক-লবিং করে বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি নেবে। ফলে যোগ্যরা পিছিয়ে পড়বে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঙ্ক্ষিত যে আউটপুট সেটা অর্জন বারবার ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় একটি গৃহপালিত জায়গায় পরিণত হচ্ছে। তাই এই কোটা পদ্ধতিই বাতিলের দাবি জানান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম বলেন, বিষয়টি একটু জটিল। কেননা এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতেই সিদ্ধান্ত হয়। তবে আমরা পরবর্তীতে এই কোটায় বরাদ্দকৃত আসন কমানোর জন্য বলেছি।


সর্বশেষ সংবাদ