বাজার চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে কারিগারি শিক্ষা: গবেষণা

  © প্রতীকী ছবি

মাধ্যমিক স্তরের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার পাঠ্যক্রমের বেশিরভাগ কোর্স বর্তমান বাজারের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না বলে এক গবেষণায় ওঠে এসেছে। গবেষণার তথ্য বলছে, কারিগরির ৭০ শতাংশ শিক্ষকের মত— পাঠ্যক্রমের বেশিরভাগ পুরানো ধাঁচের কোর্স হওয়ায় বর্তমান বাজারের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। 

আজ শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) গণসাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত  ‘মহামারি উত্তর শিক্ষা: স্কুল শিক্ষার পুনরুদ্ধার ও আগামীর অভিযাত্রা’ শীর্ষক এডুকেশন ওয়াচ-২০২২ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানানো হয়েছে।

২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গবেষণার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান আয়োজকরা।

জরিপে অংশ নেওয়া ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থীর মতে, প্রস্তাবিত কিছু কোর্স অন্যগুলোর তুলনায় বাজারমুখী হলেও কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় কর্মরত ৭০ শতাংশ এরও বেশি শিক্ষক মনে করেন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার পাঠ্যক্রমের বেশিরভাগ পুরানো ধাঁচের কোর্স বর্তমান বাজারের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। ৫৬ শতাংশ শিক্ষক মনে করেন যে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের চাহিদা মেটাতে তাদের অতিরিক্ত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। প্রায় ২৬ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন যে, প্রতিষ্ঠানগুলোতে হালনাগাদ প্রযুক্তি ও উপকরণের প্রয়োজন হবে। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ২২ শতাংশ শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ডিজিটাইজেশনের প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন। উত্তরদাতাদের ১৫ শতাংশ দক্ষ কর্মী ও আর্থিক প্রণোদনা বাড়ানোর অনুরোধ করেছেন।

কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রশিক্ষকদের দুই-তৃতীয়াংশ (৬৫.৯ শতাংশ) বর্তমান চাকরির বাজার এবং বিশ্বব্যাপী চাহিদা মেটাতে শ্রেণিকক্ষে আধুনিক প্রযুক্তিগত উপকরণ দাবি করেছেন। প্রায় ৪৮ শতাংশ উত্তরদাতা কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগ্রহী শিক্ষার্থী এবং যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাবের কথা তুলে ধরেছেন।  

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৪৩ শতাংশ চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে ওঠতে উপযুক্ত প্রশিক্ষক নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন এবং ৩৬ শতাংশ আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধিসহ সরকারি সহায়তা চেয়েছেন। জরিপকৃত শিক্ষকদের ২৫ শতাংশ আধুনিক পরীক্ষাগার সুবিধার ওপর জোর দিয়েছেন, যেখানে ৯ শতাংশ মনে করেন যে, সম্ভাব্য প্রশিক্ষণার্থী এবং নিয়োগকর্তাদের মধ্যে প্রচারাভিযানের মাধ্যমে কারিগরি ও শিক্ষা বিষয়ে প্রচার করা প্রয়োজন।

৯০ শতাংশ শিক্ষক মনে করেন, শিখন ঘাটতি কমানোর জন্য প্রস্তাবিত স্বল্পমেয়াদি পুনরুদ্ধার পদক্ষেপগুলো হতে পারে ক্লাস (অতিরিক্ত ক্লাস/অনলাইন ক্লাস বা ব্যবহারিক) বৃদ্ধি করা। মধ্যমেয়াদি পুনরুদ্ধার পদক্ষেপ (অতিরিক্ত ক্লাস/অনলাইন ক্লাস)-এর কথা উল্লেখ করেছেন ৫৬ শতাংশের বেশি শিক্ষক। ১৭ শতাংশ শিক্ষক বলেছেন কারিগরি শিক্ষায় আধুনিক উপকরণ অন্তর্ভুক্ত করা। দীর্ঘমেয়াদি পুনরুদ্ধারের (অতিরিক্ত ক্লাস/মিশ্র পদ্ধতি ক্লাস/নিয়মিত ক্লাস, আধুনিক উপকরণ ও হালনাগাদ পাঠ্যক্রম) পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেছেন প্রায় ৮৬ শতাংশ শিক্ষক।

কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সামগ্রিক উন্নতি নিয়ে তাদের মতামতের মধ্যে রয়েছে- ৫৬ শতাংশ উত্তরদাতা শিক্ষকদের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদানের পরামর্শ দিয়েছেন। ৪২ শতাংশ শিক্ষক আইসিটি উপকরণের পর্যাপ্ত সরবরাহের প্রস্তাব করেছেন। ৩৩ শতাংশ শিক্ষক প্রশিক্ষনার্থীদের আইসিটি দক্ষতা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রদশেদা কে চৌধুরীর সভাপতিত্বে এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপার্সন ড. কাজী খলীকুজ্জমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিখন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাহাদাৎ হোসেন, কাজী ফারুক আহমেদ, এডুকেশন ওয়াচের উপরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।  


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence