ঢাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন

আওয়ামীপন্থী বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রচারপত্রে বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধসহ ৩০টির বেশি ভুল

অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন
অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন  © ফাইল ছবি

আগামী ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কার্যকরী পরিষদ নির্বাচন-২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১৫টি পদের বিপরীতে এই নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। এই দুই প্যানেলের পাশাপাশি এবার সভাপতি পদে নীল দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন।

এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভাগ, অনুষদ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে গিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন সব প্রার্থীরা। শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিলি করছেন লিফলেট। এদিকে, নীল দলের বিদ্রোহী প্রার্থী অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীনের প্রচারপত্রে বঙ্গবন্ধুর নামসহ ৩০টির বেশি ভুল রয়েছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে এই অধ্যাপক ভোটারদের কাছে নিজের অবস্থান তুলে ধরতে ৩ পাতার একটি প্রচারপত্র বিলি করছেন। সেখানে এসব ভুল বানান পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন নিজেও এসব ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এসব ভুল সংশোধন করা হয়েছে।

অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীনের সেই লিফলেটে ভুল বানানের মধ্যে রয়েছে-‘তিমি’ (তিনি), ‘১২৮৫’ (১৯৮৫), ‘উত্তীণ’ (উত্তীর্ণ), ‘ইং্যান্ডের’ (ইংল্যান্ডের), ‘ক্যাতনামা’ (খ্যাতনামা), ‘মেডিটেল’ (মেডিকেল), ‘কলেটে’ (কলেজে), ‘নিন্ডিকেট’ (সিন্ডিকেট), ‘গভনিং’ (গভর্নিং), ‘সামরিক’ (সামাজিক), ‘জাতীঢ’ (জাতীয়), ‘পবন্ধ’ (প্রবন্ধ), ‘পিতিবেদন’ (প্রতিবেদন), ‘ব্যানবেই্স’ (ব্যানবেইস), ‘ভিাগের’ (বিভাগের), ‘শ্রেনীকক্ষ’ (শ্রেণিকক্ষ), ‘গবেষণাা’ (গবেষণা), ‘অংশগ্রহন’ (অংশগ্রহণ), ‘তম্মধ্যে’ (তন্মধ্যে), ‘বসংশেষষ’ (সর্বশেষ), ‘গনতন্ত্র’ (গণতন্ত্র), ‘প্রশংসিত’ (প্রসংশিত), ‘আবদন’ (অবদান), ‘বর্নাঢ্য’ (বর্ণাঢ্য), ‘কারা অন্তরীন’ (কারা অন্তরীণ), ‘দাবীতে’ (দাবিতে), ‘গন্তি’ (গণ্ডি), ‘অন্তর্জাতিক’ (আন্তর্জাতিক) ‘আওয়ার্ড’ (অ্যাওয়ার্ড), ‘বঙ্গবব্ধু’ (বঙ্গবন্ধু), ‘সন্মাননা’ (সম্মাননা), ‘মারাত্নকভাবে’ (মারাত্মকভাবে), ‘মুক্তিযুদ্ধোর’ (মুক্তিযুদ্ধের)

এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রথম দিনে (প্রচারণার) যে লিফলেটগুলো দেওয়া হয়েছিল সেখানে ভুল ছিল। তবে গত দুদিনে দেওয়া হয় তাতে কোনো ভুল ছিল না। মূলত ছাপাখানায় সমস্যায় কারণে এই ভুলগুলো হয়েছিলো। আমরা আজকে যে লিফলেট বিতরণ করেছি সেখানে দেখতে পারেন কোনো রকম ভুল ছিল না।

তিনি এই প্রতিবেদককে সংশোধিত সফট কপিটি পাঠান। তবে সংশোধন করার পরও বেশ কয়েকটা ভুল ছিল লিফলেটটিতে।

এ বিষয়ে নীল দলের সভাপতি পদপ্রার্থী  অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ওনি (জামাল উদ্দীন) নীল দল থেকে নির্বাচনে দাঁড়াননি। নীল দল থেকে মনোনয়ন না দেওয়ায় নিজে নিজে দাঁড়িয়েছেন। আর নীল দল থেকে সভাপতি পদে আমিই একমাত্র মনোনীত প্রার্থী। 

অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীনকে বিদ্রোহী প্রার্থী বলা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তো ওনার একটা প্যানেল থাকত। এখন ওনি তো একাই। তাই ওনি একক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বলা যায়।

অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন তার লিফলেটে নীল দলের সভাপতি প্রার্থী দাবি করছেন। এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ওনি তো এটা অন্যায়ভাবে লিখছে। ওনি তো এটা লিখতে পারেন না। নীল দলে আমিসহ ১৫ জন প্রার্থী। সেখানে তো ওনার নাম নেই। তাহলে তিনি নীল দলের প্রার্থী হন কিভাবে! অর্থাৎ তিনি নীল দলের প্রার্থী নন।


সর্বশেষ সংবাদ