ছাত্রলীগের সম্মেলন কবে?

ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগ  © সংগৃহীত

ছাত্রলীগে এখন মূল আলোচনার বিষয় সম্মেলন। নেতাকর্মীরা সম্মেলনের দাবি তুলেছেন। তারা চান, দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন সম্মেলন হয়ে যায়। গত ২ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য নবায়ন অনুষ্ঠানে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমাদের সহযোগী সংগঠন যাদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, তাদেরও সম্মেলন অনুষ্ঠান করতে হবে এবং তাদেরও এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে। তার এই নির্দেশনার পর ছাত্রলীগের সম্মেলনের দাবি জোরালো হয়েছে।

২০১৮ সালের ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রলীগের কমিটি দেয়া হয়। এর প্রায় এক বছর পর ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। দুর্নীতি, অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনকেই অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর সংগঠনের দায়িত্ব নেন আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য। তারা এখনও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ২০২০ সালের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এ দুজনকেই ভারপ্রাপ্ত থেকে পূর্ণাঙ্গ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তবে এ দুজনের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।

১৮ এপ্রিল ছাত্রলীগের সভাপতি জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। ফলে সম্মেলনের আলোচনার পালে হাওয়া লাগে। গণভবনে জয়-লেখক ১০ থেকে ১৫ মিনিট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান। তাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের সম্মেলনের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। তারা বলেন, নেত্রী আমাদের সারাদেশের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিগুলো দিতে বলেছেন। কাজের ধারাবাহিকতা রাখতে বলেছেন।

গণভবন থেকে বের হয়েই ছাত্রলীগের শীর্ষ দুইনেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো’ ক্যাপশনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের একটি ছবি প্রকাশ করেন। এরপরই তাদের অনুসারীরা পোস্টটিতে লাইক-শেয়ার করতে থাকেন। তবে সম্মেলন প্রত্যাশীরা এর সমালোচনা করেছেন। তাদের দাবি, আগের কমিটিও নেতাকর্মীদের ধরে রাখতে এমন পোস্ট করতেন ফেসবুকে। এটা একটা কৌশল।

আরও পড়ুন- হল ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন ভিসি জাকির, আছেন আ.লীগের কমিটিতেও

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এই মাসে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সেটি আগামী মাসের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই, মেয়াদ উত্তীর্ণ সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর সম্মেলন করতে চায় দলটি।

ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বলা হয়েছে, দুই বছর পর পর হবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্মেলন। সে হিসাবে বর্তমান কমিটির মেয়াদ পেরিয়ে গেছে ২০২১ সালে ৩১ জুলাই। সবাই তাকিয়ে আছে সংগঠনের সাংগঠনিক অভিভাবক শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের দিকে। নব্বই দশকের পর ছাত্রলীগের প্রায় সব কমিটিই সম্মেলন আয়োজনের ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছে। এসব কমিটি দুই বছর মেয়াদের জায়গায় চার বছর পার করেছে। করোনা মহামারীর কারণে ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন নিয়মিত সময়ে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, নিয়মিত সম্মেলন না হওয়ায় অনেক যোগ্য প্রার্থীর নির্ধারিত বয়স (২৯ বছর) পার হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে বয়স এক বছর শিথিল করারও দাবি জানান তারা।

এদিকে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় অধিকাংশ নেতাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তারা জানান, নিয়মিত সভা না হওয়া, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের একক সিদ্ধান্তে বিভিন্ন ইউনিটে বিতর্কিতদের দিয়ে কমিটি দেয়া, পছন্দের লোকদের দিয়ে সংগঠন পরিচালনা করার কারণে এই দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্রলীগের সম্মেলন চান।

আরও পড়ুন- প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে পদে পদে কোটা, যেভাবে পূরণ হয়

সম্মেলনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাদের সর্বোচ্চ অভিভাবক ,সংগঠনের গঠনতন্ত্র। অনুপ্রবেশ ঠেকানো এবং সংগঠনে আদর্শিক চর্চার ধারাকে গতিশীল করাই বর্তমান সময়ের মূল চ্যালেঞ্জ। মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ এবং অপশক্তির মোকাবেলা করে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঝুঁকিমুক্ত রাখাও আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আশাকরি ৩০ তম জাতীয় সম্মেলনে সাহসী ও সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন নেতৃত্ব উপহার পাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

আরেক সহ সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, চলমান কমিটি সে ঐতিহ্যের ধারাকে বজায় রাখতে পারে নি। তবে আমরা এখনো হতাশ হই নি। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগেই মেয়াদোর্ত্তীন সকল সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলন হয়ে যাবে। আমরা আশা করি, সামনের ঈদের পরপরই সম্মেলন হবে। আগামী ৩০তম সম্মেলনে নির্বাচিত নেতৃত্ব থেকে প্রত্যাশা বেশি থাকবে। তাই সুদক্ষ, সাংগঠনিক এবং প্রজ্ঞাময় নেতৃত্বের বিকল্প নেই। পাশাপাশি পারিবারিক ইতিহাসও খতিয়ে দেখতে হবে। তবেই আশানুরূপ নেতৃত্ব পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি।

এসব বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ছাত্রলীগে কোনো দূরত্ব নেই। এছাড়া সম্মেলনের জন্য আমরা সবসময় প্রস্তুত রয়েছি। আমাদের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন চাইবেন তখনই সম্মেলন হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence