‘হলে থাকলে প্রোগ্রাম-গেস্টরুম করতে হবে, না হলে টর্চার সেল গঠন করব’

সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সভাপতি তানভীর
সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সভাপতি তানভীর   © টিডিসি ফটো

‘ভালোভাবে হলে থাকতে চাস? হলে থাকলে প্রোগ্রাম, গেস্টরুম করতে হবে। না হলে টর্চার (নির্যাতন) সেল গঠন করব।’- এটা কোন সিনেমার কথোপকথন নয়। এভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল ঢাবি ছাত্রলীগের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা সভাপতি তানভীর শিকদার। শুধু হুমকি নয় সেই সাথে নির্যাতনের অভিযোগও উঠেছে তানভীরের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (১ এপ্রিল) দিবাগত রাত দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী রাজিমুল হক রাকিব। তিনি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী রাকিব দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, রাত তখন দুইটা বাজে। আমি ঘুমাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার ইয়ারমেট চারজন বন্ধু আমার কক্ষে (১৮) আসল। তারা আমাকে ডেকে তুলল। আমাকে নাকি সভাপতি তানভীর যেতে বলছে। আমার মাথা ব্যথা করতেছিল খুব। আমি যেতে অপারগতা প্রকাশ করি। তারা (বন্ধুরা) সভাপতিকে গিয়ে বিষয়টি জানায়। পরে আবার তাদেরকে আমার কক্ষে পাঠায় এবং বলে আমার যাওয়া বাধ্যতামূলক। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে তার (তানভীর) কক্ষে গেলাম।

আরও পড়ুন: শিবিরের পোস্টার লাগানোর অভিযোগে দুই ছাত্রকে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ

কক্ষে যাওয়ার পর পরই সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা শুরু করল। এরপর বলল, ‘এ তুই কি গাঁজা খাস? তুই কি শিবির করিস? প্রোগ্রাম করিস না কেন?’ এসময় তার সর্বশক্তি দিয়ে আমার গালে থাপ্পড় দিল। এর কারণ হচ্ছে এর আগের দিন জসীম উদ্দিন হলের ছাত্রলীগের একটা প্রোগ্রাম ছিল এটাতে আমি যেতে পারিনি। এসময় তার কক্ষে আরো প্রায় বিশ জনের মতো ছিল। আমার ইমিডিয়েট সিনিয়ররা অনেকেই ছিল। তাদের মধ্যে অনেকেই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করল। এর মধ্যে সামি ও সজীব আমাকে ব্যাপক গালিগালাজ করেছে।

এরপর তানভীর আমাকে হল থেকে বের হয়ে যেতে বলল। আমি আমার রুমে আসলাম। পরে আবার আমাকে ডেকে পাঠালো। আমি গেলাম। এবার সে হুমকি দিয়ে বলতেছে,‘ভালোভাবে হলে থাকতে চাস? হলে থাকলে প্রোগ্রাম, গেস্টরুম করতে হবে। না হলে টর্চার (নির্যাতন) সেল গঠন করব।’

তবে অভিযুক্ত সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তানভীর শিকদারের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এরকম কিছু হলে তো আমি নিজেই জানতাম।ও তো আমার ছোটভাই। এরকম কিছুই হয়নি।’

এদিকে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মজিবুর রহমান জানান, ‘আমি এ বিষয়ে শুনিনি। আগামীকাল খোঁজ নিয়ে দেখব।’


সর্বশেষ সংবাদ