প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস পেলেই অনশন ভাঙবেন পদবঞ্চিতরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ মে ২০১৯, ১২:০৪ PM , আপডেট: ১৯ মে ২০১৯, ১২:৩২ PM
মধ্যরাতে ফের ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদপ্রাপ্ত নেতা ও তাদের সমর্থকদের হাতে মারধরের শিকার হলেন পদবঞ্চিত নারী-নেত্রীরা। ওই হামলায় ৬ নেত্রীসহ আহত হয়েছেন ১০ জন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতারা। হামলার শিকার নেতাকর্মীরা বলছেন, বিচারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাস না পেলে তারা অনশন চালিয়ে যাবেন।
আজ রবিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনশনরত ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিত নেতারা এ ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তানবীর হাসান সৈকত বলেন, আমরা এখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের উপর হামলা ও মারধর এবং নির্যাতনের বিচার চাই। বিচারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাস না পেলে আমরা অনশন চালিয়ে যাব।
এর আগে শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে টিএসসিতে মারধরের শিকার হন পদবঞ্চিত নারী-নেত্রী নিপু ইসলাম তন্বী, তিলোত্তমা শিকদার, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদা পারভীন ও সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা, শামসুন নাহার হল শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াসমিন শান্তা, সাবেক কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপসম্পাদক এমদাদ হোসেন সোহাগ, সাবেক কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক আজমীর শেখ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহসহ ১০ জন।
বঞ্চিতদের দাবি, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নিজে ছাত্রলীগ নেত্রী বিএম লিপি আক্তারের গায়ে হাত তুলেছেন। মারধরের প্রতিকার এবং কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে পুনগর্ঠনের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন শুরু করেছেন পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
গত ১৩ মে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর থেকে অভিযোগ, আপত্তি, বিক্ষোভ জানিয়ে আসছিল পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা। ওই দিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে পদপ্রাপ্ত পক্ষের হাতে নারীনেত্রীরাসহ বঞ্চিতরা মারধরের শিকার হন। বিক্ষোভ-সালিশের ধারাবাহিকতায় শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ভেতরে কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সাথে কথা বলতে যান পদবঞ্চিত নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল। ওই স্থানে শোভন-রাব্বানীর অনুসারীরাও অবস্থান করছিল। সেখানে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সকলেই মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে গোলাম রাব্বানীর দাবি, তিনি বা অন্য কেউ মারধর করেননি। উত্তেজিত কথা হয়েছিল উভয়পক্ষের মধ্যে। তিনি এবং কেন্দ্রীয় সভাপতি উভয়পক্ষের উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করেন। এদিকে বঞ্চিতরা ভিসি চত্ত্বরে মানববন্ধনের পর টিএসসিতে রাজু ভাস্কর্যে অনশন শুরু করেন। সেখানে গিয়ে তাদেরকে অনশন ভঙ্গ করার অনুরোধ করেন শোভন ও রাব্বানী।
পদবঞ্চিতদের অংশে নেতৃত্ব দেয়া তানবীর হাসান সৈকত বলেন, “আমাদের সাথে কথা বলার জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক টিএসসিতে ডেকেছিল। আমরা সেখানে গেলে তারা বের হয়ে চলে যায়। তারপর তারা পরে দলবল নিয়ে আসে। আমরা বলেছি আপনারা আমাদের সাথে কথা বলেন। দলবল কেন নিয়ে এসেছেন। কথা চলার একপর্যায়ে রাব্বানী লিপিকে বেয়াদব বলেন। তখন আমরা এর প্রতিবাদ করি। তখনই তার কর্মীরা এসে মারামারি শুরু করে। মেয়েদের গায়েও হাত তুলেছে।”
বিক্ষুব্ধ অংশের নেত্রী শ্রাবণী শায়লা বলেন, “আমাদের ওপর হামলার বিচার চাই। নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন) ছাড়া কাউকে বিশ্বাস করি না। কমিটিতে যারা অভিযুক্ত তাদের বিষয়ে কথা বলতে আমরা এসেছিলাম। কিন্তু তারা তাদের দলবল নিয়ে আসলেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে তারা আমাদের ওপর মারধর শুরু করেন। আমাদের নারী নেত্রীদের রাব্বানী নিজের হাতে মারধর করেছেন। এর বিচার চাই।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, “আমি এ ব্যাপারে যা বলার রবিবার বলব।”