২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে কারচুপি যাচাইয়ে ঢাবির কমিটি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১৮ PM , আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৭ PM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ২০১৯ সালে ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের কারচুপির অনুসন্ধানে নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন। আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির কোষাধ্যক্ষসহ ৭ সদস্যের এ কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়।
কমিটির সদস্যরা হলেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, ফার্মেসী অনুষদের ডিন, আইন অনুষদের ডিন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট, স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রভোস্ট, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তদন্ত)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২০১৯ সালে ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের কারচুপির অনুসন্ধানে নতুন তদন্ত কমিটি গঠন, জড়িত শিক্ষকদের শাস্তি ও বহিষ্কার, অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সকল সদস্যদের ডাকসুর সদস্য পদ বাতিলপূর্বক ভূক্তভোগী প্রার্থীদের মূল্যায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে ডাকসু ভবনে সংঘটিত নৃশংস হামলার ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের বিচার দাবি করে ভূক্তভোগী জিএস প্রার্থী মো. রাশেদ খাঁন এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মো. সানাউল্লাহ হক-এর আবেদনের বিষয়টি গত ৯ জানুয়ারি ও ২ ফেব্রুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিত এসএমটি কমিটির সভায় আলোচনার করা হয়। আলোচনা শেষে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।’
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের ২০১২-২০১৩ সেশনের শিক্ষার্থী এবং জিএস প্রার্থী মো. রাশেদ খাঁন ঢাবি উপাচার্য বরাবর আবেদনপত্রে লিখেন, ‘২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে আমি জিএস প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করি। উক্ত নির্বাচনে আমার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৬০৬৩ টি দেখানো হয়। সেই নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য মো. আক্তারুজ্জামানের ভোট কারচুপির সহযোগিতায় জিএস হিসেবে নির্বাচিত দেখানো হয় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে। ডাকসুর ইতিহাসে রাত সাড়ে তিনটায় ফলাফল ঘোষণা করে তৎকালীন উপাচার্য মো. আক্তারুজ্জামান ছাত্রসমাজের সাথে প্রহসন ও মশকরায় লিপ্ত হন। জাতীয় নির্বাচনের চেয়েও জঘন্য কারচুপিতে লিপ্ত হন শিক্ষক নামধারী এই ফ্যাসিবাদের দোসর উপাচার্য ও তার সহযোগী শিক্ষকরা। এমনকি জিএস প্রার্থী গোলাম রাব্বানী ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে কোন নিয়ম না মেনেই উপাচার্য মো. আক্তারুজ্জামানের সহযোগিতায় এমফিলে ভর্তি হয়। সেসময় জাতীয় দৈনিকে এসংক্রান্ত অসংখ্য সংবাদও প্রকাশিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু গোলাম রাব্বানীর ছাত্রত্বই ছিলোনা ও শিক্ষকদের সহযোগিতয় অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালটপেপারে অবৈধভাবে ছিল মারা, কৃত্রিম লাইন সৃষ্টি করা, ভোট দানে ভয়ভীতি প্রদর্শন করাসহ নানা কারচুপির সাথে যুক্ত হয়, এছাড়া সে নিষিদ্ধ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অসংখ্য শিক্ষার্থীকেও নির্যাতন করেছে, ক্যাম্পাসে অসংখ্য হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে। এক্ষেত্রে আমি তার ছাত্রত্ব ও ডাকসু পদ বাতিল দাবি করছি। সেসময়েই সংক্ষুব্ধ প্রার্থী হিসেবে ডাকসু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাইনি। কারণ ঐ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো ডাকসু নির্বাচনে উপাচার্য মো. আক্তারুজ্জামানকে ভোট কারচুপিতে সহযোগিতাকারী ফ্যাসিবাদের দোসর শিক্ষকদের সমন্বয়ে। যেহেতু ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। আপনার নিকট আমার আকুল আবেদন, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনের কারচুপির অনুসন্ধানে নতুন তদন্ত কমিটি গঠন, জড়িত শিক্ষকদের শাস্তি ও বহিষ্কার, অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সকল সদস্যদের ডাকসুর সদস্য পদ বাতিলপূর্বক ভুক্তভোগী প্রার্থীদের মূল্যায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এক্ষেত্রে আমি আপনার নিকট আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।’
তদন্ত কমিটির বিষয়ে ঢাবির প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে এক ভূক্তভোগী প্রার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে এই তদন্ত কমিটি আজ অনুমোদন করা হয়েছে। এর আগে এ বিষয়ে কমিটি করা হলেও তার অগ্রগতি ছিলো না কোনো তাই আবার নতুন করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।