সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় থাকার চেষ্টা আওয়ামী লীগের

আওয়ামী লীগ লোগো
আওয়ামী লীগ লোগো  © সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ভিত্তি করে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ৷ সরকার পতনের প্রায় দুই মাস পরও দলের কর্মীরা আত্মগোপনে। কেবল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসছে। হামলা ও গ্রেপ্তারের ভয় কাজ করছে নেতাকর্মীদের, বিশেষ করে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের।

ছাত্র-জনতার অভ্যূথানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতের দিল্লিতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়  টানা ১৫ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকেই দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যায়।

সম্প্রতি সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যেও এই আশঙ্কার ইঙ্গিত রয়েছে। 

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সেনা প্রধানের এক সাক্ষাৎকারের পর ওই একই সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয় বলেছেন, আমাদের অন্তত এখন একটি প্রত্যাশিত সময়সীমা (নির্বাচন আয়োজনে) আছে জেনে আমি খুশি। তবে আমরা এই নাটক আগেও দেখেছি, যেখানে একটি অসাংবিধানিক-অনির্বাচিত সরকার সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তারপর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। তিনি এটাও উল্লেখ করেন যে, তার দল (আওয়ামী লীগ) ছাড়া প্রকৃত সংস্কার এবং নির্বাচন অসম্ভব।

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে আসতে না পারায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (অনলাইন)  সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে কর্মীদের জন্য নির্দেশনা, সমর্থক ও দেশের মানুষের প্রতি বিভিন্ন আহ্বান, নেতাকর্মীদের ওপর হামলার তথ্য চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে।  

এই পেজ থেকে করণীয় প্রসঙ্গেও নেতাকর্মীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে । ফেসবুকের পাশাপাশি ইউটিউব চ্যানেল, এক্স(টুইটার)অ্যাকাউন্ট, টেলিগ্রাম চ্যানেল এ সামাজিক যোগাযোগ মধ্যমগুলোও ব্যবহার করা হচ্ছে দলীয় কাজে। তথ্য দেওয়া নেওয়ার জন্য দলের একটি হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট চালু করা হয়েছে।  

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়,  এখনও তাদের বাড়ি-ঘরে হামলার আশঙ্কায় রয়েছেন অনেকে৷ এক ধরনের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে ৷ দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের অধিকাংশই দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে জানা গেছে ৷

আরও পড়ুন: গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সরকারকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিতে হবে: জামায়াত আমির

এছাড়াও, যারা দেশে আছেন বা যেতে পারেননি তারা এখনও দেশ ছাড়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ৷ জেলা পর্যায়ের নেতারাও দেশের বাইরে যাওয়ার চেষ্টায় করছেন, অনেকে চলেও গেছেন৷ বিমান বন্দর ও সীমান্ত দিয়ে বৈধ অথবা অবৈধভাবে যাওয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন অনেকে । এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে পুঁজি করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন দলের নেতা-কর্মীরা।

জানা যায়, দীর্ঘদিন আত্মগোপনে বা নিজেকে আড়াল করে রেখে অনেকেরই আর টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। আবার প্রকাশ্যে আসতেও ভয় পাচ্ছেন। এই অবস্থায় তৃণমূলে কর্মী পর্যায়ের কেউ কেউ বাধ্য হয়ে প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছেন। তবে এতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে তাদের পড়তে হচ্ছে ৷ এলাকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কর্মীদের ধাওয়া, হামলার শিকার হচ্ছে বলেও জানা গেছে ৷ আবার কেউ কেউ বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে নিজ এলাকায় বিএনপির প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন তাদের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় কিনা ৷


সর্বশেষ সংবাদ