আমি এখান থেকে যাব না, এদের প্রতিহত করব না হয় মরব: রাসেল মিয়া
- নেত্রকোনা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪৩ PM , আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫, ১২:০৯ PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পায়ে দুটি গুলি খেয়েও অনড় ছিলেন রাসেল মিয়া (১৯)। আমি এখান থেকে যাব না, এদের প্রতিহত করব না হয় মরব বলার পরে মাথায় গুলি লাগে তার। গত ৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে পাঁচটায় গাজীপুরের শ্রীপুর থানার মাওনা চৌরাস্তায় ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন রাসেলের বড় বোন-জামাই মো. শামীম মিয়া।
পরিবারের অভিযোগ, আহত রাসেলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গাজীপুরের আল হেরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসা না দিয়ে ঝামেলা আছে বলে বিদায় করে দেয়। এরপর তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ১১টায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার পরে তাকে মৃত ঘোষণা করে।
জানা যায়, নিহত রাসেল মিয়া নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের সুসং ডহরপাড়া গ্রামের মুন্সি মিয়া ওরফে নূরুল ইসলামের ছোট ছেলে। ১৫ বছরের চেয়ে বেশি সময় ধরে ঢাকায় থাকেন। নূরুল ইসলাম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হয়েও ঢাকায় রিকশা চালান। নিহত রাসেল সংসারের হাল ধরতে গার্মেন্টসে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন বলে জানিয়েছে তার বোনজামাই শামীম মিয়া।
শামীম মিয়া বলেন, একসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েও সে রাস্তা ছাড়েনি। এরপর তারা আমার শ্যালকের মাথায় গুলি করে। ৫ আগস্ট আন্দোলনে মৃত্যুর আগে প্রথমেই পায়ে গুলিবিদ্ধ হয় রাসেল। এরপর সবাই তাকে বলে তুমি হাসপাতালে যাও। সে বলে আমি এখান থেকে যাব না। এদের প্রতিহত করব, না হয় মরে যাব। পরক্ষণেই তার মাথায় একটি গুলি লাগলে সে মাটিতে পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: বার্তা দিয়ে বন্ধ করা হলো কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইট
৬ আগস্ট সকাল ১০টায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার চাচা কামরান হোসেন দুদু মিয়ার জমিতে রাসেলকে দাফন দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাসেলের মৃত্যুর ভিডিওটি আপলোড দেওয়ার পর নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. আনোয়ারুল হক রাসেলের কবর জিয়ারত করেন ও নগদ অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেন।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি জানান, নিহতের পরিবারকে গত সোমবার ৫০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে । নিহতের পরিবারের ভিটেমাটি বলতে কিছু না থাকায় আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠিয়েছি। পরে এই পরিবারটিকে আরও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।