ছাত্রলীগ ও ডিবির উপস্থিতিতে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা ফরিদপুরে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৩ PM , আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৭ PM
ফরিদপুরে ছাত্রলীগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গৃহীত কর্মসূচি প্রত্যাহার ঘোষণা করেছেন আরমান শিকদার নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী এবং ফরিদপুরের অন্যতম সমন্বয়ক বলে দাবি করেন। যদিও ফরিদপুরে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া প্রধান দুই সমন্বয়ক জেলে রয়েছেন।
জানা গেছে, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের যে কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন হচ্ছিল, সেই কক্ষে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন, জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক (ডিআইওয়ান) মোহাম্মদ আবু নাঈমসহ প্রশাসন ও গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি যখন সংবাদ সম্মেলন হচ্ছিল সে সময় প্রেসক্লাবের বাইরে জেলা ছাত্রলীগের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মীকে অবস্থান করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ডিবির ওসি আবদুল মতিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অনেক দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয় না, এ জন্য গিয়েছিলাম। ওই সময় একটি সংবাদ সম্মেলন হচ্ছিল, ওই সংবাদ সম্মেলনে কী বলা হয়, তা–ও দেখে এলাম।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি সরকার কর্তৃক পূরণ হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফরিদপুরের উদ্যোগে যে সমস্ত আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল তা প্রত্যাহার করা হলো। এখন আমাদের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।
লিখিত বক্তব্যে প্রিয় ফরিদপুরবাসী সম্বোধন করে বলা হয়, আপনারা অবগত আছেন যে, সারা বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন হয়। এই আন্দোলনে অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে আহত ও নিহত হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় অনেক সম্পদ, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, সেতু ভবন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, যা কখনোই কাম্য নয়।
আমরা এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানাই। আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার যা ইতিমধ্যেই সরকার আপিল বিভাগের নির্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে। এখন সব ধরনের সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ মেধা কোটা, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ২ শতাংশ অন্যান্য কোটা যা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সাদরে গ্রহণ করে। এই জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, প্রধানমন্ত্রীকে অশেষ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।
এর আগে প্রেসক্লাবের বাইরে কর্মসূচি প্রত্যাহার ঘোষণাকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। এ ছাড়া গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওসি আব্দুল মতিন, ডিআই-১ আবু নাঈমসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সদস্য ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যর উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ককে কোতোয়ালি থানা-পুলিশের একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আরাফাত শাহ (২৪) ও জনি বিশ্বাস (২৪)। গতকাল সোমবার তাঁদেরসহ চারটি মামলায় গ্রেপ্তারদের জামিন আবেদন করলে তা না মঞ্জুর করেছেন আদালত।