ছাত্র ফ্রন্ট ও ছাত্র অধিকার পরিষদের বিবৃতি
ছাত্রলীগের রোষানলে অধ্যাপক তানজীম, পাশে দাঁড়ানোর আহবান
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৪ PM , আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩, ১০:০৯ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার সঙ্গে বিভাগটির অধ্যাপক ড. তানজীমউদ্দীন খানকে জড়ানো ও ছাত্রলীগের হুমকির বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় শাখা ও ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
আজ শুক্রবার (৩ মার্চ) ছাত্র ফ্রন্টের দপ্তর সম্পাদক অনিক কুমার দাস সাক্ষরিত এবং ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুম সাক্ষরিত পৃথক পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানায় সংগঠন দুটি।
বিবৃতিতে তারা বলছে, প্রতিটা যৌক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন অধ্যাপক ড. তানজীমউদ্দীন খান। এজন্য ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের রোষানলে পড়ছেন তিনি। তারা তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে এবং ঘটনার স্পর্শকাতরতাকে কাজে লাগিয়ে স্পষ্টতই অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য প্রচার করছে। এ অবস্থায় সচেতন ছাত্র ও ছাত্র সংগঠনগুলোকে এই অধ্যাপকের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানায় সংগঠন দুটি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক তানজীমউদ্দীন খানকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতি অযৌক্তিক ও অনভিপ্রেত।
আরও পড়ুন: ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’ ঢাবি ছাত্রের, মধ্যরাতে শিক্ষকের বিচার দাবি ছাত্রলীগের
“এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে এবং ঘটনার স্পর্শকাতরতাকে কাজে লাগিয়ে স্পষ্টতই অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য প্রচার করছে। ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী ফেসবুকে তাকে শারীরিকভাবে আক্রমণের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, অধ্যাপক তানজীমউদ্দীন খানের শিক্ষার্থীবান্ধব বৈশিষ্ট্য এবং যেকোন প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার স্পষ্ট অবস্থান সম্পর্কে সকলেই অবগত। নেতৃবৃন্দ এমতাবস্থায় ঘটনার আগে পরের বিষয়কে যুক্ত করে সামগ্রিকতার আলোকে বিষয়টিকে বিচার করা ও ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের হীন চক্রান্তের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার সচেতন অবস্থান প্রত্যাশা করেছেন।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, এই ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের কার্যক্রম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একজন সম্মানিত শিক্ষককে হেয় প্রতিপন্ন করা।
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রের আত্মহত্যার চেষ্টা, সেদিন ক্লাসে কী ঘটেছিল?
“একজন নিরপরাধ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ এবং উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রলীগ। দলটির এক নেতা ‘প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে রক্তের মূল্য আদায় করা হবে’ বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। যা প্রকারান্তরে প্রাণনাশের হুমকি বলে আমরা মনে করি। একই সাথে আমরা অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছি।”
“ক্যাম্পাসে হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষকের মধ্যে অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিমউদ্দিন খান অন্যতম। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলনসহ প্রতিটা যৌক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলনে তানজিম স্যার শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন। যার দরুন, তিনি বারবার ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের রোষানলে পড়েছেন। তারা বারবার ভিত্তিহীন অভিযোগে শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষকদের আক্রমণ করেছেন।”
বিবৃতিতে বলা হয়, এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুলের কক্ষ তালাবদ্ধ করেন এবং নানা প্রকার হুমকি দেন। তারাই এখন এক ভিত্তিহীন অভিযোগে অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খানকে আক্রমণের নিশানা বানিয়েছেন। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একজন সম্মানিত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই ঘৃণ্য প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। একই সাথে অপরাপর ছাত্র সংগঠনগুলোকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খানের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানায়।