মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে দক্ষতায় ভারত-শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ

মাধ্যমিক শিক্ষা
মাধ্যমিক শিক্ষা  © সংগৃহীত

মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে ডিজিটাল দক্ষতায় ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে দক্ষতাহীন তরুণের সংখ্যা বাংলাদেশে সবচেয়ে কম হলেও একই বয়সীদের মধ্যে ডিজিটাল  দক্ষতায় বাংলাদেশ পিছিয়ে।

মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের দক্ষতা বলতে ঐতিহ্যগত পঠন এবং গাণিতিক দক্ষতাকে বোঝানো হয়েছে, যা সাধারণত স্কুলশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত। আর এই দক্ষতার মাপকাঠিতে বাংলাদেশের ৫৭ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণের এ দক্ষতা নেই।

শুক্রবার (১৫ জুলাই) বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবসের আগে বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) এ সংক্রান্ত এ প্রতিবেদন প্রকাশের পাশাপাশি দ্য ওয়ার্ল্ড স্কিলস ক্লক চালু করে ইউনিসেফ ও এডুকেশন কমিশন।

দ্য ওয়ার্ল্ড স্কিলস ক্লক হচ্ছে জাতিসংঘ শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ, এডুকেশন কমিশন, জেনইউ এবং ওয়ার্ল্ড ডেটা ল্যাবের যৌথ উদ্যোগ। এটি একটি ইন্টারঅ্যাক্টিভ ওয়েব টুল যা বর্তমান ও ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাপী শিক্ষা ও দক্ষতা সংকটের মাত্রা তুলে ধরে।

দ্য ওয়ার্ল্ড স্কিলস ক্লকের তথ্যমতে, ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় ৮৫ শতাংশ তরুণের ডিজিটাল দক্ষতা নেই। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে ভুটান (৬৮ দশমিক ৫), শ্রীলঙ্কা (৭০ দশমিক ৬) ও ভারত (৭৩ দশমিক ১)। তবে  আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও নেপালে থেকে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এসব দেশে ডিজিটাল দক্ষতা নেই, এমন তরুণের সংখ্যা যথাক্রমে ৯৯, ৯০ দশমিক ২ ও ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ।

আরও পড়ুন: মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রতিটি অফিসে থাকবে অভিযোগ বক্স।

ডিজিটাল দক্ষতা বলতে প্রযুক্তির ব্যবহার ও জানাশোনাকে বোঝানো হয়েছে। তরুণদের কত অংশ কম্পিউটার সম্পর্কিত প্রাথমিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে, সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, আফগানিস্তানের ৯৩ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের দক্ষতাহীন। এরপরই রয়েছে ভুটান (৮৯), পাকিস্তান (৮৪ দশমিক ৫), নেপাল (৮১ দশমিক ৭), ভারত (৭৩) ও শ্রীলঙ্কা (৬১ দশমিক ৫)।

ইউনিসেফ ও শিক্ষা কমিশনের ‘রিকভারিং লার্নিং: আর চিলড্রেন অ্যান্ড ইয়ুথ অন ট্র্যাক ইন স্কিলস ডেভেলপমেন্ট?’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের চার ভাগের মধ্যে প্রায় তিন ভাগ তরুণের কর্মসংস্থান সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। ৯২টি দেশের ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ ও শিক্ষা কমিশন।

প্রতিবেদনে স্কুলের বাইরে থাকা তরুণদের উচ্চহার এবং মাধ্যমিক স্তরে দক্ষতা অর্জনের নিম্নমুখিতাকে এ জন্য দায়ী বলে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দক্ষতা সংকটে ভুগছে।

এ বিষয়ে ইউনিসেফের শিক্ষাবিষয়ক পরিচালক রবার্ট জেনকিন্স বলেন, দক্ষ শিশু ও তরুণ প্রজন্ম দেশের সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও আর্থসামাজিক উন্নতির জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়। অথচ শিশু ও তরুণদের বড় অংশ অদক্ষ, যা বিশ্বকে অনুৎপাদনশীলতার দিকে নিয়ে যাবে। এই সংকট সমাধানে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষিত ও তাদের দক্ষতা উন্নয়নে জরুরি ভিত্তিতে বিনিয়োগ করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ