যেভাবে নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকালো মেধাবী ছাত্রী তৃষা

শিশু শিক্ষার্থী তৃষা  (বামে)
শিশু শিক্ষার্থী তৃষা (বামে)  © সংগৃহীত

মা-বাবার দারিদ্র্যতার অজুহাতে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী তৃষাকে বাল্যবিবাহ দেবার চেষ্টা করে। সে দশটি মেয়ের মতো চুপ থাকেনি, সাহসিকতার সঙ্গে সকল বাধা অতিক্রম করে সে তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে আশ্রয় নেয়। পরে ওই বাল্য বিয়ে বন্ধ করে দেয় স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে তৃষাকে সরকারি শিশু পরিবার বালিকা নওগাঁ (এতিমখানা)য় ভর্তি করে সেখানে নিরাপদে লেখাপড়া করার সার্বিক ব্যবস্থা করে দিয়েছে প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১২ নভেম্বর সন্ধ্যায় জেলার মাড়োয়ারী পট্টি এলাকার একটি কাজী অফিসে ওই ৬ষ্ঠ শ্রেণীর (রোল-১) মেধাবী শিশু শিক্ষার্থীর সাথে জয়পুরহাট শহরের বামনপুর-টুকুর মোড় এলাকার এক লেদ-শ্রমিকের সাথে বিয়ের বন্দোবস্ত তৃষার পরিবার। পরের দিন সকালে স্কুলে গিয়ে মেয়েটিকে কাঁদতে দেখেন তার প্রধান শিক্ষক আইয়ূব আলী।

তখন প্রধান শিক্ষক জিজ্ঞাসা করলে মেয়েটি জানায়, আমাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ছাত্রীর কথা শুনে প্রধান শিক্ষক জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাহী কর্মকর্তা পুলিশ পাঠিয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধ করেন।

পরে মেয়েটিকে প্রধান শিক্ষকের জিম্মায় তার বাড়িতে রাখার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শিশুটিকে সরকারি শিশু পরিবার বালিকা নওগাঁ (এতিম খানা)য় ভর্তি করে সেখানে সরকারি খরচে নিরাপদে লেখাপড়া করার সার্বিক ব্যবস্থা করেন।

ওই শিশু ছাত্রীকে বুধবার (১৭ নভেম্বর) ওই এতিম খানায় ভর্তি করান প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা। সরকারি শিশু পরিবার বালিকা নওগাঁর তত্ত্বাবধায়ক শহিদুল ইসলাম বলেন, জয়পুরহাট প্রশাসনের সহযোগিতায় শিক্ষকরা তৃষাকে নিয়ে আসলে আমরা ভর্তি করে নিয়েছি।

উল্লেখ্য, ওই শিশুটির বাবা তার মাকে নানার বাড়ি রেখে আরেকটি বিয়ে করার জন্য অন্যত্র চলে যান। সেই থেকে মেয়েটির মা বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। আর শিশুটি শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের লেখাপড়া করে আসছিল।

মেয়েটির পরিবার জানায়, আমাদের মেয়েটি এতিমখানায় থেকে মানুষের মতো মানুষ হয়ে অনেক বড় হোক এতে আমরা অনেক খুশি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত রহমান জানান, বাল্য বিবাহের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেয়েটির ভবিষ্যত নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সদয় নির্দেশনা মোতাবেক তাকে সরকারি শিশু পরিবার, বালিকা নওগাঁতে ভর্তি করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence