৪০০ কোটি টাকা দুর্নীতি : যে সচিবের শাস্তি চাইলেন আইডিয়াল শিক্ষার্থীরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৪২ PM , আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৪৯ PM
৪০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি আবু হেনা মোরশেদ জামানকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুতি ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের নির্দেশনা দেয়ার অভিযোগও তোলা হয়েছে। আবু হেনা মোস্তফা জামান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, নির্মাণ কাজ, কেনাকাটাসহ বিভিন্ন খাতে অনিয়ম করে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের।
গত বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) মতিঝিলে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শাখার সামনে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আবু হেনা মোরশেদ জামানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলেন।
মানববন্ধনে তারা আবু হেনা মোরশেদ জামানকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে আস্থাভাজনদের অন্যতম এবং ক্ষমতার চরম অপব্যবহারকারী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তারা বলেন, আবু হেনা মোর্শেদ জামান গত ২৭ জুলাই বিয়াম ভবনে জনপ্রশাসন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ কঠোরতার সঙ্গে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন : আইডিয়াল-ভিকারুননিসা-মনিপুর স্কুলে মিলিটারি অধ্যক্ষ পদায়নের দাবি
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, আবুহেনা মোরশেদ জামান যুগ্মসচিব থাকাকালীন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হন এবং তৎকালীন অধ্যক্ষ সাহান আরা বেগম, আওয়ামী লীগের নেতা গোলাম আশরাফ তালুকদার,আতিকুল ইসলাম খান, খন্দকার মোস্তাকসহ অন্যান্যদের নিয়ে দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে স্কুল তহবিলের টাকা লুটপাট করেছে। এছাড়া ভর্তি, শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ, বদলি, অবকাঠামো নির্মাণকাজ, কেনাকাটাসহ নানা খাত বানিয়ে ভুয়া ভাউচারে শত শত কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত সংস্থা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্ত প্রতিবেদনে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে।
আরও পড়ুন : ভুল বুঝাবুঝি দূর করতে আইডিয়াল স্কুলের ছেলেদের টুপি পরা নিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তি
তারা আরও অভিযোগ করেন, আবু হেনা মোরশেদ জামান আইডিয়াল স্কুলকে তার চাকরির প্রমোশনের সিঁড়ি হিসাবে ব্যবহার করছেন। এই স্কুলে জড়িত থাকায় অতিরিক্ত সচিব, ও সচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে ভাল ভাল পদে পদায়ন পেয়েছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে তোষামোদ করে শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণের ওপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি নেন এবং সরকারের সচিব পদ বাগিয়ে নেন। তিনি সিএমএসডিতে করোনাকালীন সময়ে থাকাকালে শতশত কোটি টাকা এবং প্লানিং মিনিস্ট্রির আইএমইডিতে কর্মরত থাকার সময় প্রকল্পের টাকা দুর্নীতি করেছেন। এছাড়াও নরসিংদীর ডিসি থাকার সময় দুর্নীতির কারণে তার বিরুদ্ধে কর্মচারীসহ সর্বস্তরের জনতা মিছিল ও বিক্ষোভ করেছে। তিনি বিদেশে টাকা পাচার করেছে। বনশ্রীতে তার মায়ের নামে ৪ ইউনিটের সম্পূর্ণ বিদেশি ফিটিংস ও নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ৭ তলা বাড়ি তৈরি করেছেন।
আরও পড়ুন : ফের ছেলেদের টুপি পরা বাধ্যতামূলক করলো আইডিয়াল
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনে তার নামে অভিযোগ আছে, কিন্তু প্রভাবশালী আমলা হওয়ায় সে ফাইল চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা স্থানীয় সরকার সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের দুর্নীতির তদন্ত, অবৈধ সম্পদের হিসাব, চাকরি থেকে অপসারণ, স্থায়ী চাকরিচ্যুতি ও গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের দাপ্তরিক টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা কর হলেও তা সম্ভব হয়নি।