একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন বাবা-মেয়ে

একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন বাবা-মেয়ে
একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন বাবা-মেয়ে  © সংগৃহীত

দীর্ঘ ২৫ বছর পর নিজের ইচ্ছা পূরণে ৪০ বছর বয়সে আবারও পড়াশোনা শুরু করেন হান্নান। এ বছর নাটোরের লালপুর থেকে মেয়ে হালিমা খাতুন (১৫) সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন বাবা আব্দুল হান্নান। শিক্ষার জন্য বয়স যে কোনো বাধা নয় আবারও প্রমাণ করলেন তিনি।

নাটোর উপজেলার লালপুর থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন আব্দুল হান্নান। ২৫ বছর আগে ১৯৯৮ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন নাটোরের লালপুর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হান্নান। কিন্তু পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারেননি। আর পড়ালেখা হয়ে ওঠেনি।

সেসময় বাবার চায়ের দোকানে ব্যবসা শুরু করেন। চায়ের দোকানের ব্যবসার পাশাপাশি নিজস্ব জমিজমা চাষ করতেন তিনি। সেই দোকানের আয় ও জমিজমা চাষ করে স্ত্রী, দুই ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে সংসার জীবনে বেশ ভালো আছেন।

দুই যুগ আগে এসএসসি পাস করতে না পারার আক্ষেপ ঘোচাতে এ বয়সে আবারও পড়ালেখা শুরু করেন আব্দুল হান্নান। ভর্তি হন রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখায়। আর একমাত্র মেয়ে হালিমা খাতুন নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাইস্কুলের মানবিক শাখার শিক্ষার্থী। এবার বাবা-মেয়ে এক সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

এ বয়সে আবারও পড়াশোনা কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল হান্নান বলেন, ছাত্রজীবনের এসএসসি পাসের প্রবল ইচ্ছা দিনে দিনে তার মধ্যে প্রবল থেকে প্রবলতর হতে থাকে। এজন্য ২০২১ সালে তিনি উপজেলার রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম (ভোকেশনাল) শ্রেণিতে ভর্তি হন।

আরও পড়ুন: বিদ্যানন্দকে আইনি নোটিশ

তিনি আরো বলেন, সংসারে আমার স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। এক ছেলে ১১ বছরের আবু হানিফ নিরব। সে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ছোট ছেলে ৪ বছরের রমজান মিয়া।

এই বয়সেও বাবা এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ায় খুশি মেয়ে হালিমা খাতুন। সে বলে, বাবাকে নিয়ে আমি অনেক গর্ব করি। আমার বাবার অনেক মেধা আছে, ইচ্ছা শক্তি আছে। তাই এ বয়সে লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছার কারণে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন তিনি। শিক্ষার কোনো বয়স নেই। সব বয়সে সবাই পড়াশোনা করতে পারে। তাই আমার বাবাকে দেখে অন্যরা পড়াশুনায় অনুপ্রাণিত হবে।


সর্বশেষ সংবাদ