শাস্তি পেতে যাচ্ছেন অভিভাবকদের অপমান করা সেই বিচারক

অভিভাবকদের অপমানের ঘটনায় বিচারকের শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
অভিভাবকদের অপমানের ঘটনায় বিচারকের শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন  © টিডিসি ফটো

বগুড়ায় মেয়ের সহপাঠীদের অভিভাবককে অপমান করায় ঘটনায় অভিযুক্ত বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে, বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, জেলা ও দায়রা জজ আমাকে ফোন করে বলেছেন, যাকে নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসময় তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটি এ ঘটনায় যদি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা অন্য কারও এই সংশ্লিষ্টতা পায়, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়া নিয়ে এক ছাত্রীর সঙ্গে তার সহপাঠীদের ঝগড়া হয়। এর জেরে সহপাঠীদের অভিভাবকদের বিদ্যালয়ে ডেকে ‘অপমান’ করেন ওই ছাত্রীর মা অতিরিক্ত দায়রা জজ  রুবাইয়া ইয়াসমিন। 

বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, নিজ নিজ শ্রেণিকক্ষ পালা করে ঝাড়ু দেওয়ার নিয়ম রয়েছে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে। তবে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী ঝাড়ু দিতে না চাওয়াকে কেন্দ্র করে অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়। পরে সেই ছাত্রী তাঁর মা বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩-এর বিচারকের কাছে নালিশ দেয়। এ ছাড়া সহপাঠীদের তিরস্কার করে ফেসবুকে পোস্ট দেয় ওই ছাত্রী। সেই পোস্টের নিচে প্রতিবাদ জানিয়ে কমেন্ট করেন কয়েকজন। এর জেরে ওই বিচারক বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিভাবকদের ডেকে অপমান করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ সারা দিন এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে ছাত্রীরা।

বিকেল ৫টার দিকে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিন বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আসেন। তিনি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন।

এ সময় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানায়, অতিরিক্ত জেলা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে স্কুলে এসে আলোচনায় বসতে হবে। পরে প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে স্কুলে আসার অনুরোধ জানালে তিনি আসতে অস্বীকৃতি জানান।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা আলোচনাস্থল থেকে বের হয়ে স্কুলের সামনে সড়ক অবরোধ করে। অতিরিক্ত পুলিশ সেখানে পৌঁছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্কুলের ভেতরে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে রাত ৮টায় জেলা প্রশাসক ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম স্কুলে আসেন। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বক্তব্য শোনেন।

রাত ৯টার দিকে বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ একেএম মোজাম্মেল হক চৌধুরী জেলা প্রশাসককে ফোনে জানান, বগুড়া সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে উদ্ভূত ঘটনার জন্য অতিরিক্ত জেলা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের জানালে তাঁরা শান্ত হন এবং স্কুল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, এই স্কুলে আমার সন্তানও পড়ে। এখানে কোনো বৈষম্য চলবে না। প্রান্তিক পর্যায় থেকে আসা শিক্ষার্থী যে সুযোগ পাবে আমার সন্তানও সেই সুযোগ পাবে। আমার সন্তান সরকারি গাড়িতে স্কুলে আসে না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence