শিক্ষকের মানসিক চাপে ছয়তলা থেকে ঝাঁপ, এক সপ্তাহ পর স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
- জামালপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫০ PM , আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৫, ১১:৫৬ AM
শিক্ষকের মানসিক চাপে পড়ে ছয়তলা ভবন থেকে ঝাঁপ দিয়ে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানল আলো নামক স্কুলছাত্রী। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (নিটো)-তে তার মৃত্যু হয়। আলো বকশীগঞ্জ পৌরসভার জেলখানা রোড এলাকার বাসিন্দা বাবু মিয়ার মেয়ে এবং উলফাতুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বয়স মাত্র ১৩ বছর।
ঘটনার শুরু গত ২১ জুলাই দুপুরের দিকে। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে শিক্ষক দফতরের ওপরে ছয়তলার ছাদে উঠে পড়ে আলো। একপর্যায়ে সবার চোখের সামনে ছাদ থেকে ঝাঁপ দেয় সে। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকার নিটো হাসপাতালে নেওয়া হয়। দীর্ঘ এক সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয় সে।
আলোর বড় বোন আখি আক্তার বলেন, ওইদিন শিক্ষক নুর মোহাম্মদ তাকে টিসি দেওয়ার হুমকি দেন। এতে সে চরম মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে ছাদ থেকে লাফ দেয়। কান্নায় ভেঙে পড়া আখি বলেন, ওর হাসিমাখা মুখটাই এখন শুধু স্মৃতি হয়ে রইল।তিনি সরাসরি শিক্ষক নুর মোহাম্মদকে ঘটনার জন্য দায়ী করে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা দাবি করেন।
আলোর মৃত্যুতে পরিবারে শোকের মাতম নেমে এসেছে। এলাকায় নেমে এসেছে বিষাদের ছায়া। সহপাঠীরা বলছে, আলোকে তো এমন ভাবতেই পারিনি। সে চুপচাপ ছিল, কিন্তু এতটা কষ্ট পাচ্ছিল তা আমরা বুঝিনি।
ওই শিক্ষার্থীর চাচা আবুল কালাম বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মেয়েটা কখনোই আত্মহত্যা করতে পারত না। স্কুলে ওর সঙ্গে কী এমন হলো, সেটা তদন্ত করতে হবে। শিক্ষক নুর মোহাম্মদের মানসিক চাপের কারণেই সে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, এই ঘটনার বিচার না হলে আমরা চুপ থাকব না।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।