শিশুর পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ

শিশু নাঈম উর-রহমান
শিশু নাঈম উর-রহমান  © টিডিসি ফটো

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ভর্তির কয়েক দিনের মাথায় ক্লাসের উপযোগী নয় এমন কথা বলে এক শিশুর পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। দিচ্ছে না ছাড়পত্রও। এমন অভিযোগ শিশুটির বাবার। ছাড়পত্র না দেয়ায় প্রায় ১ বছর ধরে পড়ালেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুটি। ফলে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে।

জানা গেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের দি বাডস রেসিডেন্টসিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ইংলিশ মিডিয়াম শাখায় আব্দুর রহমান সুমন ভর্তি করান তার দুই ছেলেকে। ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে শিশু দুটি ওই স্কুলে ভর্তি হলেও 
তার মধ্যে নাঈম উর-রহমান নামে নার্সারী-১ এর শিশুকে ক্লাসের উপযোগী নয় এমন অভিযোগে শিশুটির সাথে শ্রেণী শিক্ষকরা নানা নেতিবাচক আচরণ করেন বলে জানান তার বাবা। 

শিশুটির বাবার অভিযোগ, নিয়মিত বেতন দেয়া সত্ত্বেও কেবল ক্লাসের উপযোগী নয় এমন কারণ দেখিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভর্তির ১৬ দিনের মাথায় শিশুটিকে আর ক্লাস করার সুযোগ দেয়নি। ফলে শিক্ষার সুযোগ থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়। অধ্যক্ষের পরামর্শে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ওই ‍শিশুকে ভর্তি করালেও কিছু দিন পর থেকেই তাকে ক্লাস-পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে গত মে মাসে ওই স্কুলে একটি আইনি নোটিশ পাঠান শিশুটির বাবা। নোটিশটি শিক্ষা মন্ত্রনালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হলেও কোনো সমাধান আসেনি।

এ নিয়ে ‍শিশুটির বাবা আব্দুর রহমান সুমন বলেন, আমার সন্তান নাঈমকে ভর্তি করানোর পর থেকে স্কুলের ক্লাস টিচাররা ভিন্ন চোখে দেখতে শুরু করে তাকে। তার ১৬তম ক্লাস থেকে শ্রেণী শিক্ষকগণ তার ডায়েরীতে নেতিবাচক মন্তব্য লিখতে শুরু করেন। এনিয়ে আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করলে নাঈম পড়াশোনায় মনোযোগী না এবং তার দুষ্টমির কারণে অন্য শিশুদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটছে বলে স্কুলের প্রিন্সিপাল আমাকে জানান।

তিনি বলেন, পরবর্তিতে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার সন্তানকে ক্লাসে ঢুকতে দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে আবারো প্রিন্সিপালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো আমার সন্তান নিয়ে আপত্তিকর কথা বলে আমাকে বের করে দেন। আমি আমার সন্তানকে ভিন্ন কোন স্কুলে পড়ালেখার সুযোগের জন্য ছাড়পত্র চাইলেও প্রিন্সিপাল তা দিতে অস্বীকার করেন। আমার সন্তানকে এ সময়ের মধ্যে কোনো পরীক্ষায় অংশ নিতেও দেয়নি। এ বছর জুলাই মাসে নতুন করে তার ভর্তি নেয়ার কথা থাকলেও তাকে ভর্তি নেয়নি। 

তিনি আরও বলেন, নাঈম এবং তার অন্য জমজ ভাইকে প্রতিদিন একই সাথে স্কুলে গেলেও নাঈম ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। মন খারাপ করে স্কুল গেটে দাঁড়িয়ে থাকে। একজন বাবা হিসেবে এই দৃশ্য দেখা খুবই কষ্টের। স্কুল থেকে টিসি সরবরাহ না করায় সন্তানকে অন্য কোথাও ভর্তি করানো যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে গেলে তিনিও এড়িয়ে গেছেন। এ অবস্থায় আমার সন্তানের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেলে আমি স্কুল কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিশ পাঠাই।

জানা যায়, শিশুটি ভালোভাবে কথা বলতে না পারায় তাকে আরেকটু বড় হলে স্কুলে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে এ বিষয়ে স্কুলের অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence