কৃষি গুচ্ছের ফল চ্যালেঞ্জ যেভাবে

শিক্ষার্থী
শিক্ষার্থী  © ফাইল ছবি

আটটি সরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত এ ফলের উত্তরপত্র মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন ভর্তিচ্ছুদের একাংশ। ভর্তিচ্ছুদের এমন অভিযোগ আমলে নিয়ে ফল চ্যালেঞ্জের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটি।

ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা শিক্ষার্থীদের কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব (শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার) বরাবর লিখিত আবেদন করতে হবে। এই আবেদন সরাসরি করতে হবে। আবেদনের সাথে এক হাজার টাকা ফি জমা দিতে হবে। আবেদনের সময়সীমা নির্ধারণ না করা হলেও ২০ আগস্টের পূর্বেই আবেদন করতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির এক সদস্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষা শেষ হলে একদল শিক্ষার্থী অভিযোগ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে তাকে। গত শিক্ষাবর্ষেও এমন অভিযোগ উঠেছিল। এবারও অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগ নিয়ে আবেদন করতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: কৃষি গুচ্ছের উত্তরপত্র মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগ ভর্তিচ্ছুদের

তিনি আরও বলেন, ২০ আগস্টের পূর্বেই ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব বরাবর এক হাজার টাকা ফি দিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনের সময় ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিয়ে আসতে হবে। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে আলাদা করে একটি ডেস্ক তৈরি করা হয়েছে। এই ডেস্ক থেকে শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে।

এদিকে কৃষি গুচ্ছের ফল প্রকাশের পর থেকেই একাধিক ভর্তিচ্ছু দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের অফিসে ফোন করে বলেন, পরীক্ষায় তারা যে পরিমাণ প্রশ্নের সঠিক উত্তর করেছেন সে পরিমাণ নম্বর তারা পাননি। যে পরিমাণ নম্বর তারা প্রত্যাশা করেছিলেন সেটা না পাওয়ায় অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন। মূলত তারা কৃষি গুচ্ছের প্রকাশিত এ ফল পুনঃমূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন।

প্রকাশিত ফলে অভিযোগ তুলে শান্তা জাহান নামে একজন ভর্তিচ্ছু বলেন, কৃষি গুচ্ছের পরীক্ষায় আমি ৭১টা প্রশ্নের উত্তর করেছি। যে প্রশ্নগুলো শতাভাগ ঠিক ছিল। এরপরেও নেগেটিভ ধরলে ৬৬+ থাকার কথা। কিন্তু আমি এখন ওয়েটিং লিস্টেও নেই। অথচ ৭১.২৫ এসপেক্টড হয়েও ১২৬৪তম পজিশন আবার ৭৩.২৫ এসপেক্টড হয়েও ১০৬৫ পজিশন। তাই ফলাফল পুনঃমূল্যায়ন করা হোক।

নাহিদ হোসাইন নামে এক ভর্তিচ্ছু বলেন, এ ফলাফল মেনে নেয়া যায় না। পরীক্ষা দিয়ে মিলিয়ে দেখেছি ৭৪ আসে। কিন্তু রেজাল্টে সিরায়াল দেখায় ৯০২৩! এটা কিভাবে সম্ভব। এতোগুলো স্টুডেন্টের জীবন নিয়ে খেলতেছেন উনারা। প্রকাশিত এ ফলাফলে অসঙ্গতি রয়েছে।

জাহিদ আশিকুর রহমান বলেন, কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর মিলিয়ে ৬৩+ মার্কস আসে। কিন্তু আমার কোথাও রোল আসেনি। ওয়েবসাইটে লিখা আপনি ভর্তির জন্য বিবেচিত হননি। আমার রোল ৫১৮০১। কিন্তু আমার বাঁ পাশের যার আসন ছিল তার রোল ছির ৫১৮০০। সে অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এখন দেখছি তার রোল ওয়েটিং লিস্টে আসছে। 

এবারে পরীক্ষায় ২০১৭ সালের মাধ্যমিক ও ২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে চলতি বছরের আবেদন যোগ্য প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন। এবারে আবেদনের যোগ্যতা ছিল সর্বমোট ন্যূনতম ৮.৫। এমসিকিউ পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইংরেজিতে ১০, প্রাণীবিজ্ঞান ১৫, উদ্ভিদবিজ্ঞান ১৫, পদার্থবিজ্ঞান ২০, রসায়ন ২০ ও গণিতে ২০ নম্বরের রাখা হয়েছে।

ভর্তিচ্ছুদের অভিযোগ নিয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কৃষিগুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২১-২২ এর কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, এ ধরনের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। প্রতি বছর এমন একটি শ্রেণী থাকেন। আমরা তাদের জন্য দরজা খোলা রেখেছি, ফল নিয়ে কারো কোন অভিযোগ থাকলে তারা আমাদের লিখিত দিতে পারেন।


সর্বশেষ সংবাদ