সিজিপিএ ৪-এ ৩.৯৬ পেয়ে সারাদেশে প্রথম ঢাকা আলিয়ার ফাহিম

খায়রুল ইসলাম ফাহিম
খায়রুল ইসলাম ফাহিম  © টিডিসি ফটো

ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার অধীনে ৪ বছর মেয়াদী অনার্স কোর্সে আল-কোরআন বিভাগ থেকে সিজিপিএ ৪-এ ৩.৯৬ পেয়ে সারাদেশে প্রথম হয়েছেন মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার শিক্ষার্থী খায়রুল ইসলাম ফাহিম। প্রকাশিত অনার্স চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষা-২০১৮ এর ফলে আল-হাদিস বিভাগ থেকে দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসার আরও দুই শিক্ষার্থী সমান সংখ্যক সিজিপিএ পেয়েছেন।

ফাহিম লক্ষ্মীপুর জেলার পিয়ারাপুর গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। তার বাবা পেশায় একজন শিক্ষক। মা শাহীন আরা বেগম গৃহীনি। খায়রুল তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট।

স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ফাহিম ২০০৫ সালে টুমচর ইসলামিয়া কামিল  মাদ্রাসায় ভর্তি হন। ২০২০ সালে এ মাদ্রাসা থেকে কামিল শেষ করেন তিনি। পরে ২০১৪ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার অধীনে ঢাকা আলিয়ার আল-কোরআন এন্ড ইসলামিক বিভাগে ভর্তি হন তিনি। ২০২১ সালে অনার্স শেষ করেন তিনি। এর মাঝে ২০১৯ সালে জামিয়া ইমদাদুল উলূম ফরিদাবাদ থেকে দাওরাও শেষ করেছেন ফাহিম। সেখানেও মেধাতালিকায় প্রথম দিকে ছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: আলিয়া মাদ্রাসাকে ‘ঢাকা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ করার দাবি

গত মঙ্গলবার (২৮ জুন) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অধীনে অনুষ্ঠিত ফাজিল তৃতীয় বর্ষ (অনিয়মিত) পরীক্ষা-২০১৮, চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষা-২০১৭ এবং চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষা-২০১৮ এর ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলে পাসের হার ছিল যথাক্রমে শতকরা ১০০, ৯৮.৩১ এবং ৯৮.৪৯ ভাগ।

খায়রুল ইসলাম ফাহিম বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, শিক্ষা জীবনে এ পর্যন্ত সব ক্লাসেই ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছি। আল্লাহর রহমতে আমি অনার্স পরীক্ষায় সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে ৩.৯৬ পেয়েছি। সারাদেশে এটাই আমাদের অনার্স সব বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ পয়েন্ট।

সাহিত্য ও সংস্কৃতির জগতেও পদাচারণা রয়েছে ফাহিমের। সম্প্রতি তিনি আরবী ভাষায় রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। সেখানে তাকে ৫০ হাজার টাকার আর্থিক পুরস্কার দেয়া। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু তার হাতে চেক তুলে দেন।

 

ফাহিম জানান, আমার জীবনে টুমচর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অবদানই সবচেয়ে বেশী। ইলমে দ্বীনের খেদমতে এ মাদ্রাসার অবদান অনেক বেশী। শতবর্ষী এ বিদ্যাপীঠে ইলমের পাশাপাশি আমলের গুরুত্ব দিয়ে ছাত্রদেরকে আলেম হক্কানী-রব্বানী বানানোর চেষ্টা করা হয়। আমি বর্তমানে  মাদ্রাসাতেই শিক্ষক হিসেবে যুক্ত রয়েছি।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফাজিল তৃতীয় বর্ষ (অনিয়মিত) পরীক্ষা-২০১৮-তে অংশ নেয়া ৩৩ জনের মধ্যে ৩৩ জন, চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষা-২০১৭-তে অংশ নেয়া ৬৪৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬৩৮ জন এবং চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষা-২০১৮তে অংশ নেয়া ৭২৯ জনের মধ্যে ৭১৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

আরও পড়ুন: ১৯৭১ সালে চার শ্রেণীতেই প্রথম হয়েছিল টুমচর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা

ফাহিম অনার্সের প্রাপ্ত ফলে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, অনেক ভালো লাগছে। কঠোর পরিশ্রম এবং মা-বাবার ও শিক্ষকদের দোয়াই সবার জীবনকে সফলতায় পৌঁছাতে পারে। আমার বিশ্বাস, আমি মা-বাবা ও শিক্ষকদের দোয়ায় এতদূর আসতে সক্ষম হয়েছি।বিশেষ করে আমার পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষক টুমচর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহাম্মাদ হারুন আল মাদানী সাহেব হুজুরের দোয়া আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে তিনি ফাহিম জানান, ভবিষ্যতে সুন্নাহর অনুসারী হয়ে মুসলিম উম্মাহর একজন মুখলিস দায়ী হতে চাই। দেশ-জাতির কল্যাণে কাজ করতে চাই। ইলমে নববীর একজন খাদেম হতে চাই।


সর্বশেষ সংবাদ