জবিতে ছাত্র সংগঠনে নিষেধাজ্ঞা, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি  © সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) অঞ্চলভিত্তিক সংগঠন ও সমিতির সভা-সমাবেশ ও জমায়েত নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে ক্ষোভ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ মনগড়া। এর কোন যথাযথ কারণ নেই। অঞ্চল ভিত্তিক সংগঠন তথা ছাত্রকল্যাণ সংগঠন থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়ে থাকে। ভাতৃত্ববোধ ধরে রাখতে আঞ্চলিক সংগঠন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন: ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিনকে সমর্থন জানালেন কিম জং উন

জবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাসেল জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষাতেই সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্ববিদ্যালয় বৈশ্বিক একটি বিষয়। একটি অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসবে, তাদের নিজেদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে একে অপরকে জানতে পারবে। অনেক অসচ্ছল শিক্ষার্থীও এর মধ্য দিয়ে আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকে। অঞ্চলভিত্তিক সংগঠনের অবশ্যই দরকার আছে।

জবির ছাত্রদল নেতা হিমেল জানান, অঞ্চলভিত্তিক সংগঠন ভাতৃত্ববোধ জাগ্রত হবার একটা প্লাটফর্ম। মানুষ এই শহরে গুচ্ছভাবে মিলেমিশে থাকতে পারে। একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পারে যা পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে নানা রকম উপকারে আসে। অঞ্চলভিত্তিক সংগঠন থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কি ক্ষতি আমার বোধগম্য নয়।

ছাত্র ইউনিয়নের রুহুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন হটকারি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোন এখতিয়ার নেই। মন ইচ্ছা সিদ্ধান্ত প্রশাসন নিতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র কল্যাণ সংগঠন অবশ্যই দরকার আছে।

ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ বলেন, ছাত্রদের জন্য ক্ষতিকর বা ছাত্র নেতিবাচক কোন সংগঠন ছাত্রদের সুবিধার জন্য বন্ধ করা যেতে পারে, কিন্তু যে সংগঠন ছাত্রদের পক্ষে কাজ করে, ছাত্রদের কল্যাণে সেটার বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত মোটেও ঠিক নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, অঞ্চলভিত্তিক ছাত্র কল্যাণ সংগঠনগুলো তাদের কার্যক্রম চালাতে পারবে, তবে শিক্ষার্থীরা কোন প্রকার সমাবেশ করতে পারবে না।

আরও পড়ুন: ২৬ বছরে মারা গেলেন মাইক্রোসফটের সিইওর ছেলে

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, ছাত্রকল্যাণ সংগঠন গুলো তাদের কার্যক্রম ক্যাম্পাসের বাইরে চলমান রাখবে। ইদানীং ছাত্র কল্যাণ সংগঠনের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক কমিটি হচ্ছে, এটা নিয়ে অন্তঃকোন্দল সৃষ্টি হচ্ছে এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সকল কার্যক্রম বাইরে চলমান রাখবে আঞ্চলিক সংগঠন গুলো।

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে জেলা ও উপজেলা ভিত্তিক নানা সংগঠন রয়েছে। প্রতিটি জেলা থেকে আগত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছাত্রকল্যাণ গঠন করা হয়। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কিংবা শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহায়তার জন্যই ছাত্রকল্যাণ গঠন করার কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে ছাত্র সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে মাঝে মধ্যেই দেখায় দেয় দ্বন্দ্ব, সংঘাত।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল একই নিষেধাজ্ঞা জারি করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় আবারও ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সভা-সমাবেশ ও জমায়েত বন্ধের নির্দেশনা দেয় প্রশাসন।


সর্বশেষ সংবাদ