তিনি তো মা, তিনি ভালো বুঝবেন: চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তা

মো. শরীফ উদ্দিন
মো. শরীফ উদ্দিন  © সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়ে দুদকের চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেছেন, ‘তিনি তো মা। তিনি ভালো বুঝবেন। আমি মায়ের কাছে প্রার্থনা করি, যেন ন্যায়বিচার করা হয়।’

শরীফ বলেন, ‘চাকরি হারানোর পর আমার পরিবার নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি। অসহায়ত্বের মধ্যে দিন কাটছে। আমার ওপর জুলুম করা হয়েছে।’

মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এসব কথা বলেন শরীফ। এর আগে সকাল ১১টায় দুদকে আসেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে নিজের বিরুদ্ধে আসা তিন অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

শরীফ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যেসব অভিযোগে ডেকেছে, সেইগুলোর ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়েছি।

আরও পড়ুন: রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনে ভারতীয় মেডিকেল শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এ দিকে শরীফের নিরাপত্তা ও চাকরি চ্যুতির ব্যাপারে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন ১০ আইনজীবী।

তবে শরীফ জানান, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনের সময় দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন ২০২১ সালের ১৬ জুন হালনাগাদ ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালকসহ ইসির ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর আগে, গত ১৫ জুন রোহিঙ্গা নাগরিকদের অবৈধ উপায়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান ও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তকরণের ঘটনায় ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সরফরাজ কাদের রাসেলসহ ৬ জন এবং ১২ জুন ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল বালিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শরীফ।

আরও পড়ুন: পুতিনসহ রাশিয়ার ৬ শীর্ষ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা দিল জাপান

তবে ১০ জুন দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ প্রদান করায় সাবেক প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলামের (বিএসসি) বড় ছেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মো. মুজিবুর রহমান, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সারওয়ার হোসেন, সাবেক ব্যবস্থাপক মো. মজিবুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সার্ভেয়ার মো. দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করে আলোচনায় আসেন শরীফ উদ্দিন। এ মামলায় মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সারওয়ার হোসেন, সাবেক কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান ও সার্ভেয়ার মো. দিদারুল আলমকে গ্রেপ্তারও করে দুদক। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

এছাড়া তার আরও বেশ কয়েকটি আলোচিত অভিযান ছিল। তারমধ্যে ২০২১ সালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে সংলগ্ন কলাতলী বাইপাস রোড এলাকায় পুলিশ ব্যুরো অব ইন্টেলিজেন্স (পিবিআই) অফিস তৈরির জন্য এক একর (১০০ শতক) জমি অধিগ্রহণে জালিয়াতির ঘটনা উঠে আসে দুদকের এ কর্মকর্তার তদন্তে। এ ঘটনাসহ কক্সবাজারের মেগা উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জমি অধিগ্রহণের দুর্নীতিতে জড়িত বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রাজনৈতিকের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তার করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ