মায়ের কিডনিতে নতুন জীবন পেলেন বেরোবির জাহিদ

মা-ছেলে
মা-ছেলে   © সংগৃহীত

মায়ের দেয়া কিডনিতে নতুন জীবন পেলো ছেলে। ৫৪ বছর বয়সী বুলি বেগম ২৪ বছর বয়সী ছেলে জাহিদ হাসানকে তাঁর একটি কিডনি দিয়েছেন। এই মা ও ছেলে এরই মধ্যে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। শরীরে ব্যথা ও দুর্বলতাসহ শারীরিক জটিলতা থাকলেও তাঁরা হাসিমুখে নিশ্চিন্ত মনে দিন কাটাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: হলের ডাইনিংয়ের খাবার মান যাচাই করতে নিয়মিত খাবেন রাবি শিক্ষকরা

পঞ্চগড়ের ছেলে জাহিদ হাসান রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করেছেন। স্নাতকোত্তরে ভর্তির আগেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

জাহিদ স্নাতক পাস করার পর পরিবারটি নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল। তারপরই জাহিদের অসুস্থতা ধরা পড়ে। তাঁর দুটি কিডনি বিকল হয়ে যায়। কিডনি প্রতিস্থাপন করার বিকল্প কিছু ছিল না। জাহিদের মা কিডনি না দিলে ভোগান্তি আরও বাড়ত। কিডনি ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক শেখ মইনুল খোকন তাঁর অভিজ্ঞতায় বলেন, কিডনি দানের ক্ষেত্রে নারীরাই এগিয়ে আছেন। বাবা-ভাইয়ের তুলনায় মা ও বোনেরাই কিডনি দানে এগিয়ে আসেন বেশি।

রংপুর ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ির পর গত বছরের ৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর শ্যামলীতে সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে (সিকেডি) ভর্তি হন জাহিদ। কিডনি প্রতিস্থাপনের আইনি বিষয় সুরাহার জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনসহ সব প্রক্রিয়া শেষে গত ২২ জানুয়ারি রাতে মা ও ছেলের অস্ত্রোপচার হয়।

বুলি বেগম হাসপাতাল ছেড়েছেন অস্ত্রোপচারের সাত দিনের মাথায়। আর জাহিদ হাসপাতাল ছেড়েছেন ১০ দিনের মাথায়। রাজধানীর শ্যামলীতে ভাড়া বাসায় অস্ত্রোপচারের পর মা ও ছেলের প্রথম দেখা হয়। সিকেডি হাসপাতালে মা ও ছেলে ছিলেন আলাদা দুই ভবনে, ফলে সেখানে দেখা হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।

গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে জাহিদ হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন। অস্ত্রোপচারের পর তখনই হয় মা ও ছেলের প্রথম দেখা। সেই সময়ের বর্ণনা দিয়ে জাহিদের বড় বোন নূর নাহার মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, মায়ের চেহারা দেখে মনে হলো তিনি প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছেন। জাহিদও বারবার মা ভালো আছেন কি না, তা জানতে চাচ্ছিল। হাসপাতাল ছাড়ার আগে চিকিৎসকেরাও জানিয়েছেন, মা ও ছেলে সার্বিকভাবে ভালো আছেন।

এই কষ্টের কথা জানলে ছেলেকে কিডনি দিতেন কি না জানতে চাইলে যন্ত্রণাকাতর মায়ের ঠোঁটে ফুটে ওঠে হাসির রেখা। বলেন, ‘আগে জানলেও দিতাম। মায়ের কাছে সন্তানের জীবনই আগে। সন্তানের জীবন বাঁচানো মায়ের জন্য ফরজ।’

আরও পড়ুন: পতাকা থেকে ‘কালেমা’ লেখা তুলে দিচ্ছে সৌদি সরকার

সিকেডি হাসপাতালের প্যাকেজে মা ও ছেলের অস্ত্রোপচার, ১১ দিন হাসপাতালে থাকা বাবদ খরচ হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। তবে বিভিন্ন পরীক্ষা ও ওষুধ বাবদ এ পর্যন্ত হাসপাতালে খরচ হয়েছে প্রায় সাত লাখ টাকা।

নূর নাহার জানান, এই টাকা জোগাড়ের জন্য তাঁর ১০ শতাংশ জমি এবং জাহিদদের পৈতৃক ভিটা বিক্রি করতে হয়। ওয়ারিশদের অনুমতির বিষয় আছে বলে বাইরের কারও কাছে জমি বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। তাই কম মূল্যে আত্মীয়ের কাছে বিক্রি করতে হয়েছে। ওই আত্মীয় নিজেই অসুস্থ থাকায় জমি বিক্রির সব টাকা হাতে পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence