ইবিতে বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৫:৩০ PM , আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৫:৫০ PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে বেড়েই চলেছে বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য। চুরি, ছাত্রী উত্যক্ত, মাদক ব্যবসা, বেপরোয়া গতিতে ক্যাম্পাসে মটরবাইক চালানোসহ একের পর এক অপকর্ম করে চলেছে বহিরাগতরা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি কোনো ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নতুন ব্লকে মেয়েদের কিচেন রুমে মাঝবয়সী এক পুরুষ লোককে দেখতে পায় ছাত্রীরা। লোকটি হাঁটাহাঁটি করছিলেন বলে জানান তারা। পরে কয়েকজন মেয়ে রুম থেকে বের হয়ে ওই লোকের সাথে কথা বলতে শুরু করে। একপর্যায়ে লোকটি দৌড়ে গেট দিয়ে হল থেকে বাইরে চলে যায়।
আরও পড়ুন: ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া আলমগীরের নানা কীর্তি ফাঁস
ওইসময় গেটে নিরাপত্তায় আনসার থাকার কথা থাকলেও কেউ ছিল না বলে অভিযোগ করেন ছাত্রীরা। পরে তারা হল প্রভোস্টকে বিষয়টা অবগত করেন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান ওই হলের আবাসিক ছাত্রীরা।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক এক ছাত্রী বলেন, আনসার থাকার পরও একটা বহিরাগত লোক কিভাবে মেয়েদের হলের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে। যদি কোন দূর্ঘটনা ঘটত তাহলে এর দায় কেউ নিতেন। এখন একটা ভয় কাজ করছে। মেয়েদের হলগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানায়।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি (সোমবার) রাত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট মাঠ থেকে পিচ কাভার চুরি হয়। ইতোপূর্বেও টেনিস গ্রাউন্ডের লাইট, জিমের বাহিরের স্টোরে রাখা লাইটের সেট ও নলকূপ চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া জিনিসের মূল্য প্রায় লক্ষাধিক টাকা। খোঁজ করার পরেও পাওয়া যায়নি এসব জিনিসপত্র। কর্তৃপক্ষকে অবগত করলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ শারীরিক শিক্ষা বিভাগের। এসব চুরি বহিরাগতরা করছে বলে ধারণা তাদের।
জিমনেশিয়ামে বহিরাগতরা ব্যায়ামাগারের যন্ত্রাংশ ব্যবহার ও জিমনেসিয়ামের ভিতরে খেলাধুলা করেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। সেখানে বহিরাগত কয়েকজনকে ব্যায়ামাগারের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ইউনাইটেড ন্যাশন ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডির সুযোগ
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্যাম্পাসের লেক এলাকায় মাদকসেবনসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বহিরাগতরা। দ্রুত মোটরবাইক চালিয়ে ছাত্রীদের উত্যক্ত করে তারা। বহিরগতদের দৌরাত্ম্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস থেকে প্রতিনিয়ত চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মামুন বলেন, এখন আমরা করোনাকালীন কঠিন সময় পার করছি। এই সময়ে বহিরাগত নিষিদ্ধ করা হোক। এছাড়া আমাদের বিভিন্ন বহিরাগতদের দ্বারা হেনস্থার শিকার হতে হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ছাত্রী হলের ঘটনাটির বিষয়ে অবগত নয়। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিব। এছাড়া ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের নিষিদ্ধের পক্ষে আমিও। তবে বহিরাগতরা অনেক সময় শিক্ষার্থীদের অভিভাবক পরিচয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে। পরবর্তীতে নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।