শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের খবরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের খবরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের খবরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ  © ফাইল ছবি

করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় আগামী দুই সপ্তাহের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। টিকা দেয়ার পরেও নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের খবরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ অন্তত পক্ষে চলমান পরীক্ষাগুলো শেষ করার দাবি জানিয়েছেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। অন্যসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যতটুকু সম্ভব শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে পারলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তা সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে তারা অনলাইন সম্প্রসারণ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, অনুন্নত এলাকা ও বাংলাদেশে ইন্টারনেট এবং দারিদ্রতাকে দায়ী করছেন।

আরও পড়ুন: হল খোলা রেখে অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষার পথে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

দীর্ঘ ১৮ মাস মহামারীর কবলে পড়ে মূল্যবান সময় খুইয়ে শিক্ষার্থীরা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে ঠিক সে মুহূর্তে এমন সিদ্ধান্তে অনেক শিক্ষার্থীকে ফেসবুকে নানা রকম হতাশা-ক্ষোভের স্ট্যাস্টাস দেখা গেছে। কাউকে আবার বইপত্র ছিড়ে ফেলতেও দেখা যায়।

রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের ছাত্রী আয়েশা আখতার জানান, গেল বছর ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি জানিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এবারে তো প্রায় অধিকাংশ টিকার আওতায় চলে আসছে। এরপেরও যেসব শিক্ষার্থী আক্রান্ত হচ্ছে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রয়োজন ছিল। গুটি কয়েক শিক্ষার্থীর জন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ঠিক হয়নি।

এর আগে, দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে আজ শুক্রবার আগামী ১৪ দিনের জন্য স্কুল-কলেজ এবং সমমনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এদিন এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। এরপর পরেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিতের কথা জানানো হয়।

লাকী আক্তার নামে এক অভিবাবকের মেয়ে নোয়াখালী সরকারী কলেজে অনার্স চতুর্থ বর্ষে পড়ালেখা করছেন।তিনি বলেন, যেভাবে সময় নষ্ট হয়েছে সেটা আর পূরণ করা কোন মতেই সম্ভব নয়। তারপরও আশা করেছিলাম এবার মেয়ের অনার্সটা শেষ হবে। মেস ভাড়া, অনান্য খরচ বহন করতে করতে অতিষ্ট হয়ে গেলাম। কিন্তু, আর দুই-তিনটা পরীক্ষা কেবল বাকি এ অবস্থায় সরকার বন্ধ করে দিল।

আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে অ্যাসাইনমেন্ট চলবে: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের খবরে মলিনতার চাপ উদ্ভিদবিদ্যা নিয়ে পড়া তার মেয়ের মুখেও। কান্না জড়িত কন্ঠে মদিনা আক্তার বলেন, কখনো ভাবতে পারিনি চার বছর এত দীর্ঘ হবে। সেশনজট নিয়ে এর আগে অনেক গল্প শুনতাম। এখন দেখছি নিজের গল্পটা আরো বড়। আঠারো মাস পর অনার্স জীবনটা শেষ করার সুযোগ পেয়েছি কেবল সে মুহুর্তে এসে শেষ হতে হতেও আর হলো না।

রাজশাহী কলেজে পরিসংখ্যান নিয়ে পড়া তৃতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, এতোদিনে মাস্টার্স শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। অথচ আমি যেখানে ছিলাম সেখানে পড়ে আছি। এভাবে আর কতোদিন? মাঝে মাঝে হতাশায় পড়ে যাই। পড়াশোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। আমাদের দিকটা সরকারের দেখা উচিত। আমাদের কোন না কোন ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২০ সালের অনার্স ৪র্থ বর্ষ নিয়মিত এবং বিশেষ পরীক্ষা চলমান রয়েছে। গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে শুরু হয়ে আগামী ০৬ ফেব্রুয়ারি এ পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ পরীক্ষা শেষ হয়েছে। বাকি যে কয়েকটি কোর্সের পরীক্ষা থেকে গেছে সেগুলোর জন্য আরও আরও কয়েকটি দিন সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি আবেদন জানানো হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence