হাজিরা মেশিন নষ্ট, একজনের রোল লিখে দিচ্ছেন আরেকজন
- জায়েদ মিশু, কবি নজরুল কলেজ
- প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২০, ০৯:৩৪ PM , আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০, ১০:৫৭ PM
রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ‘ফেস রিকগনিশন অ্যাটেন্ড্যান্স সিস্টেম’ চালু করে কলেজ প্রশাসন। কলেজের প্রতিটি বিভাগের সামনে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন বসানো হয়। প্রায় ৭ মাস হলো বেশ কয়েকটি বিভাগের এসব হাজিরা মেশিন নষ্ট হয়ে আছে। এর সুযোগ নিচ্ছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। ডিজিটাল হাজিরা মেশিন নষ্ট হওয়ায় লিখে হাজিরা নিচ্ছেন শিক্ষকরা। ফলে যেসব শিক্ষার্থী উপস্থিত নেই, অনেকে তাদের হাজিরাও লিখে দিচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ উপস্থিত থাকতে হয়। উপস্থিতি ৬০-৭৪ শতাংশর মধ্যে হলে নন-কলেজিয়েট ফিস দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। ৬০ শতাংশর কম হলে ডিস-কলেজিয়েট বলে গণ্য হয়।
সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়েত উল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে সাত কলেজের মান বাড়াতে হবে। আমি অবশ্যই তাদের পেছনে ফেলে আগাবো না। এজন্য অধিভুক্ত এসব কলেজের শিক্ষা পদ্ধতি পাল্টে দিতে সুদূরপ্রসারী কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে সবার মঙ্গল হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রায় সাত মাস হলো কলেজের হাজিরা মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এদিকে নতুন বছরে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে কলেজের ১৯টি বিভাগে নতুন শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়েছেন। তারপরও মেশিনগুলো ঠিক করার কোনো উদ্যোগ নেই কলেজ প্রশাসনের।
দর্শন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নোটিশ দিয়েছে ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে। জানুয়ারির ২৮ তারিখ থেকে আমাদের ক্লাস শুরু হয়েছে। কিন্তু হাজিরা মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। আমরা হাজিরা দিতে পারছি না। মাঝে মাঝে রোল নাম্বার লিখে দিতে হয়। এতে করে অনেকেই কলেজে আসে না। একজনের রোল নাম্বার আরেকজন লিখে দেয়।
ইসলাম শিক্ষা বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আশরাফুল বলেন, গত বছর থেকে আমাদের বিভাগে হাজিরা মেশিন নেই। অনেক বার স্যারদের বলা হয়েছে। তারা কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
কলেজের আইসিটি শিক্ষক নাজমুল হক জানান, ২০১৯’র সেপ্টেম্বরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কলেজে হামলা চালায়। তখন তারা ‘এ’ ভবনে ইসলাম শিক্ষা বিভাগের হাজিরা মেশিন ভেঙে ফেলে। এছাড়াও ডিসেম্বরে শীতকালীন ছুটি চলাকালীন সময়ে দর্শন বিভাগের হাজিরা মেশিন ভেঙে ফেলা হয়। এসব ব্যাপারে বিভাগীয় প্রধানদের জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, সাত কলেজ আর আগের অবস্থানে নেই। নিঃসন্দেহে সাত কলেজে শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে। এসময় শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।