‘প্রতিবাদী আবরারের মৃত্যু মানে একটি জাতিসত্ত্বার মৃত্যু’
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০১৯, ০৪:৪৬ PM , আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:০৭ PM
ভারতের সাথে অসম চুক্তির প্রতিবাদ করে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে আবরারের মৃত্যু মানে একটি জাতিসত্ত্বার মৃত্যু। এটা শুধু তার মতামত নয়, এটি দেশের অধিকাংশ মানুষের মতামত। এই মতামত দেয়ার কারণে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী ফোরামের শিক্ষকেরা।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে আয়োজিত মানবন্ধন থেকে তারা এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি এবং আবরার হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে তা অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সহ-সভাপতি মামুনুর রসীদের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, আবরারের মৃত্যু শুধু মৃত্যু নয় এটি একটি জাতিসত্ত্বার মৃত্যু। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া স্ট্যাটাস শুধু তার মতামত নয়, এটি দেশের অধিকাংশ মানুষের মতামত। এই মতামত দেয়ার কারণে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেছে।
বক্তারা বলেন, দিনের পর দিন সরকারের ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগ আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে তারা সব ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত। দেশে কোন বিচার নাই, প্রশাসন নাই, তারাই প্রশাসনের সবকিছু।
এ সময় সবার কাছে প্রশ্ন রেখে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্রলীগের উদ্ধর্তন নেতারা কি জুনিয়রদের মানুষ মারার প্রশিক্ষণ দেন? নাহলে তারা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কীভাবে সন্ত্রাসী হয়ে উঠলো? ছাত্রলীগকে আর নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এই সন্ত্রাসী সংগঠনটিকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।
একটি মহল বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে দেখতে চায় উল্লেখ করে তারা বলেন, আজকে বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে জীবন দিতে হয়। আবার বাংলাদেশে কেউ কেউ জয় হিন্দ স্লোগানের মাধ্যমে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে দেখতে চায়। এ কারণে তারা ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান দিচ্ছেন। তারা মনে মনে শপথ গ্রহণ করেছেন যাতে এই বাংলাদেশ অনতিবিলম্বে ভারতের অংশ হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়নের আড়ালে করা দুর্নীতি নিয়ে তারা আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন গুলো দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। দুর্নীতির প্রমাণ হিসেবে ক্যাম্পাসে সৌন্দর্য-বর্ধনের নামে আশি লক্ষ টাকার ঘাস লাগানোর নাটক করা হয়েছে। আমরা ধিক্কার জানাই এই মানসিকতাকে। কোথাও কোথাও কয়েক খানা ইট খাড়া করে দিয়ে ছবি তৈরি করে কোটি কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে।
নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে তারা বলেন, উপ-উপাচার্যের যে অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে এতেই প্রমাণ হয় শিক্ষা প্রধানসহ সব জায়গায় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ হয়। যারা এই নিয়োগের নামে বাণিজ্যে করছে তাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানোর জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
মানবন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, অধ্যাপক ড. এনামুল হক, অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম ফারুকী, অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সরকার, অধ্যাপক ড. কে বি এম মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম প্রমূখ। মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।