খুবিতে নিন্মমানের খাবার মুখরোচক করতে ‘টেস্টিং সল্টের’ ব্যবহার, ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) হল ক্যান্টিন, ক্যাফেটেরিয়া ও আশপাশের খাবারের দোকানগুলোতে নিম্নমানের ও অতিরিক্ত দামের খাবার পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো এসব খাবারে ক্ষতিকর রাসায়নিক ‘টেস্টিং সল্ট’ ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, 'দীর্ঘদিন ধরে বাসি ও অরুচিকর খাবারকে মুখরোচক করতে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করা হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী, এই রাসায়নিককে ‘স্নায়ু বিষ’ বলা হয়, যা মস্তিষ্কের ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।'

গত ২রা অক্টোবর বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন হলের রান্নাঘর থেকে শিক্ষার্থীরা প্রায় ২৫০ গ্রাম টেস্টিং সল্ট উদ্ধার করেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান বলেন, ‘আমি কৌতূহলবশত রান্নাঘরে ঢুকে একটি বয়ামে টেস্টিং সল্ট দেখতে পাই। পরে বিষয়টি প্রভোস্টকে জানাই।‘

এ ঘটনায় হলের ক্যান্টিন ম্যানেজার সাগর বলেন, ‘বিশেষ কিছু রান্নার জন্য মাঝে মাঝে সামান্য পরিমাণে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করা হয়।‘

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, খিচুড়ি, পোলাও, মাংস, রোস্ট, মাছ, ডাল ও সবজিসহ প্রায় সব খাবারেই নিয়মিতভাবে এই রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে। অপরাজিতা হলের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পড়াশোনার পাশাপাশি এখন নিত্যদিন পচা-বাসি খাবার ও অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। টেস্টিং সল্ট মেশানো খাবার খেয়ে প্রায়ই আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি।‘

খাবারে টেস্টিং সল্ট ব্যবহারের স্বাস্থ ঝুঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডা. কানিজ ফাহমিদা বলেন, ‘নিয়মিত টেস্টিং সল্ট গ্রহণে তাৎক্ষণিক প্রভাব না পড়লেও দীর্ঘমেয়াদে এটি স্নায়ুতন্ত্র ও অন্যান্য অঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।‘

ছাত্রীদের হলগুলোতে এখনো ক্যান্টিন না থাকায় অনেক ছাত্রী বাধ্য হয়ে নিজে রান্না করেন বা বাইরে থেকে অতিরিক্ত দামে খাবার কিনে খান। হলরোডের দোকানগুলোতে একটি ডিম ২৫ টাকা ও একটি পিস মুরগি বা মাছ ৫০–৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. খসরুল আলম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানায়, ‘খাবারের দাম কিছুটা বেড়েছে, তবে ক্যান্টিনে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার না করার বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা যদি নিয়মিতভাবে অভিযোগ জানান, প্রশাসন অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।‘

 


সর্বশেষ সংবাদ