সময় বাড়ানোর দাবি

অপূর্ণাঙ্গ গ্রন্থাগারে আগ্রহ কম কুবি শিক্ষার্থীদের

  © টিডিসি ফটো

প্রতিষ্ঠার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থাগার গড়ে ওঠেনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রয়োজনীয় বইয়ের স্বল্পতা এবং স্বতন্ত্র ভবন না থাকায় প্রশাসনিক ভবনের পঞ্চম তলার মাত্র দুটি কক্ষ নিয়ে চলছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কার্যক্রম। গ্রন্থাগারটি খোলা থাকে শুধু একাডেমিক সময়ে। এমনকি পুরো গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়াশরুম নেই একটিও। প্রয়োজনীয় এসব সুযোগ সুবিধার অভাবে গ্রন্থাগারের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

গ্রন্থাগারটি ঘুরে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবনের পঞ্চম তলায় মাত্র দুটি কক্ষ নিয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগে মোট শিক্ষার্থী রয়েছেন প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। কিন্তু তার বিপরীতে গ্রন্থাগারে আসন রয়েছে মাত্র ৯০টি। তবে শিক্ষার্থীর তুলনায় আসন স্বল্পতা থাকলেও স্বতন্ত্র ভবন না থাকায় এবং প্রয়োজনীয় বই এবং সুযোগ সুবিধার অভাবে অধিকাংশ সময় আসনগুলো খালি পড়ে থাকতে দেখা যায়।

গ্রন্থাগার সূত্রে জানা যায়, দেশি-বিদেশী শিক্ষকদের গবেষণা ও সাময়িকীসহ গ্রন্থাগারটিতে মোট বইয়ের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। তবে প্রয়োজনীয় বইয়ের অভাব থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের নিজেদের বই নিয়ে গ্রন্থাগারে প্রবেশের কোন ব্যাবস্থা নেই।  এছাড়া নিয়মিত একটি দেশীয় ও চারটি আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন এবং পত্রিকা রাখা হয় ২১টি।

এদিকে গ্রন্থাগারটি পঞ্চম তলায় হওয়ায় গ্রন্থাগারমুখী হচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্রী আফরোজা আক্তার হতাশা প্রকাশ করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘পঞ্চম তলায় উঠে পড়া কিছুটা কষ্টকর। এছাড়া প্রয়োজনীয় অনেক বই পাওয়া যায়না। বাইরের বই নিয়েও প্রবেশ করা যায়না। এতে করে আগ্রহ কিছুটা কমে যায়।’

এছাড়া গ্রন্থাগারটির ই-লাইব্রেরীতে বই, ম্যাগাজিন এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নাল রয়েছে প্রায় দুই লাখ। তবে ই-লাইব্রেরীতে এতো সংখ্যক বই থাকলেও বেশীরভাগ শিক্ষার্থীই ব্যাবহারের পদ্ধতি জানেন না।

শুধু একাডেমিক কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে গ্রন্থাগারটি। এ সময়টা রাত ৮টা পর্যন্ত বাড়ানো এবং ছুটির দিনেও লাইব্রেরী চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওবায়দুল্লাহ অনিক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘লাইব্রেরী শুধুমাত্র একাডেমিক সময় খোলা থাকে। লাইব্রেরী যদি ৫টার পরেও খোলা রাখা যায় আর ছুটির দিনেও চালু রাখা যায় তবে শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধা হবে।’

এদিকে গ্রন্থাগারের পরিসর বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনিক ভবনের পঞ্চম তলার একপাশে দুইটি রুমে চলে গ্রন্থাগারের কার্যক্রম। আর অন্যপাশে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ল্যাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসি’র কার্যক্রম চলে। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবরুম যদি একাডেমিক ভবনে নেয়া হয় তবে সাময়িকভাবে গ্রন্থাগারের জন্য আরেকটি রুম বাড়ানো যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গ্রন্থাগারের সময় বৃদ্ধি করতে হলে জনবল নিয়োগ দিতে হবে জানিয়ে গ্রন্থাগারটির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান মহি উদ্দিন মোহাম্মদ তারিক ভুঁঞা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সময় বাড়ানোর বিষয়ে প্রশাসন আমাদের জানিয়েছে। দ্বিতীয় শিফট চালু করতে হলে অন্তত আটজন লোক বাড়াতে হবে। লোকবল, জেনারেটর, সিসিটিভি এবং ওয়াশরুমের জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি।’

এসময় ই-লাইব্রেরীর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিভাগগুলোর পক্ষ থেকে কর্মশালার ব্যাবস্থা করা হলে আমরা শিক্ষার্থীদের ই-লাইব্রেরীর ব্যবহার সম্পর্কে অবহিত করতে পারবো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার(অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘লাইব্রেরীর সময় বাড়ানোর বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছি। আশা করি দ্রুত ব্যবস্থা করতে পারবো।’


সর্বশেষ সংবাদ