পলাতক কর্মকর্তা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে ৫ মাস ধরে বেতন দিচ্ছে কুবি
- কুবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫২ PM , আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৪ PM

পদত্যাগ বা বরখাস্ত না হওয়া সত্ত্বেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. রেজাউল ইসলাম মাজেদ টানা ছয় মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়মিতভাবে তাকে বেতন প্রদান করেছে। তবে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর, আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) হঠাৎ করেই তার বেতন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মুজিবুর রহমান মজুমদার স্বাক্ষরিত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ পরিচালকের কাছে প্রেরিত এক অফিস আদেশ সূত্রে জানা যায়, রেজাউল ইসলাম মাজেদ গত বছরের ৬ আগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী ‘পলায়ন’ (ডিজারশন) এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে। বিষয়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চলতি জানুয়ারি মাস থেকে তার বেতন স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মচারী ‘পলায়ন’-এর দায়ে অভিযুক্ত হলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা যেতে পারে, যার মধ্যে তিরস্কার, বাধ্যতামূলক অবসর, চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্তকরণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একই বিধিমালার ২(চ) ধারায় বলা হয়েছে, বিনা অনুমতিতে ৬০ দিন বা তার বেশি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে সেটি ‘পলায়ন’ হিসেবে গণ্য হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সরকারের পট পরিবর্তনের আগে সর্বশেষ ১৬ জুলাই অফিস করেছেন মাজেদ। এরপর থেকে তিনি ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তার অনুপস্থিতির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই।
রেজাউল ইসলাম মাজেদ দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিত। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের মামলার আসামি। ২০২৩ সালে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদে চাকরি পান বলেও অভিযোগ রয়েছে।