নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ১৬ নেতাকর্মীর সনদ বাতিল, বহিষ্কার

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। ১৬ নেতাকর্মীর মধ্যে চারজনের সনদ বাতিল, একজনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার, দুজনের সনদ এক বছরের জন্য স্থগিত এবং নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে সিট দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় এ শাস্তি দেয়া হয়। সংঘর্ষের সময় বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও আজকের পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাংবাদিক ফাহাদ বিন সাঈদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যায়যায়দিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আহসান হাবিব রিয়াদ হামলার শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবু নাঈম আব্দুল্লাহ ওরফে যাযাবর নাঈমকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত অন্যান্যরা হলেন- সাবেক উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক জয় মোড়লকে (আইন ও বিচার বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) স্থায়ী বহিষ্কার ও স্নাতকের সনদ বাতিল, সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক লোবন মোখলেছকে (ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতকোত্তর সনদ বাতিল, ছাত্রলীগ নেতা তানভীর আহমেদ তুহিনকে (লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতকের স্থায়ী বহিষ্কারসহ সনদ বাতিল, ছাত্রলীগ কর্মী মোস্তফা ফাহিম সিরাজিকে (অর্থনীতি বিভাগ,২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতকোত্তর সনদ বাতিল করা হয়েছে।

একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সামিউল হক হিমেলকে (টিপিএস বিভাগ, স্নাতকোত্তর ২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) এক বছর, সাবেক উপশিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক মাছুম বিল্লাহকে (নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) এক বছর, ছাত্রলীগ কর্মী রেজওয়ানুল কবীর রাব্বিকে (ইইই বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) তিন বছর, আবু রায়হানকে (লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) তিন বছর, গালিব ফয়সাল নির্ঝরকে (ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) দুই বছর, সৌমিক জাহানকে (চারুকলা বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) তিন বছর, নাঈমুল ইসলাম অনিককে (আইন ও বিচার বিভাগ, স্নাতকোত্তর ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ) এক বছর, পবিত্র মণ্ডলকে (পপুলেশন সায়েন্স, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) এক বছর এবং আব্দুল্লাহ আল শাহরিয়ারকে (চারুকলা ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আইন অনুষদের সহ-সম্পাদক হাবিবুল্লাহ জামিরকে (আইন ও বিচার বিভাগ, স্নাতকোত্তর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতকোত্তর সনদ ও ছাত্রলীগ কর্মী নয়ন হাসানের (ইএসই ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতক সনদ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

ঘটনার তদন্তে গঠিত তিন সদস্যের কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গত ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ