বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

কবি নজরুল কলেজের নিহত-আহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানাল প্রশাসন

কবি নজরুল কলেজের নিহত-আহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানাল প্রশাসন
কবি নজরুল কলেজের নিহত-আহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানাল প্রশাসন

গত জুনে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে ৫ আগস্ট । এ আন্দোলনে কবি নজরুল সরকারি কলেজের ৪ জন শিক্ষার্থী নিহত এবং আহত ৩২ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে কবি নজরুল সরকারি কলেজ প্রশাসন। এই তালিকা তৈরিতে সহযোগিতা করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।

তালিকার আহত ও নিহত শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ গুলিবিদ্ধ ও ছাত্রলীগ-পুলিশি অত্যচারে আহত হয়েছেন বলে জানান তারা।

জানা যায়, গত ৩ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। এর ধারাবাহিকতায়  কবি নজরুল সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়।

কলেজের নিহত চার শিক্ষার্থীরা হলেন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকরাম হোসাইন কাউসার, একই শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাদ এবং ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ওমর ফারুক এবং তৌহিদুল ইসলাম।কাউসার এবং জিহাদ গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। কাউসার পুরান ঢাকার পাতলা খান লেন এলাকায়  মারা যান এবং জিহাদ যাত্রাবাড়ী এলাকায় মারা যান।

১৫ জুলাই ছাত্রলীগ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করে। কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে ভিসি চত্ত্বর অভিমুখে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে গেলে ছাত্রলীগের হামলায় আহত হন প্রায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থী। আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে সবার সাথে অংশগ্রহণ নিয়ে কবি নজরুল কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পড়ুয়া ৩২ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কবি নজরুল কলেজের ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের। এ বিভাগের আহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ১০ জন। শরীফ, রুমান ও ইউসুফ খান গুলিবিদ্ধ হয়। সৈয়দ আরমান আলীকে নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে দুই দিন পুলিশ অমানবিক অত্যাচার চালান। বাকি ৬ জন ছাত্রলীগ কর্তৃক লাঠিপেট-ইট দ্বারা আহত ও পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়।

কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ৭ জন আহত হন।জিসান শহীদ মিনারে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়। চারটি গুলি লাগলেও তিনটি বের করা হয়েছে ও একটি বের করতে পারেনি। আবু উসামা আন্দোলনে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয় ও ৫ জন পুলিশি অত্যাচারের শিকার হয়। 

এছাড়াও ইসলাম শিক্ষা, বাংলা, অর্থনীতি ও রসায়ন বিভাগের ২ জন করে শিক্ষার্থী আহত হন। হাবিব সরকার লক্ষীবাজার এলাজায় বাঁ হাতে গুলিবিদ্ধ হয়।মো. তারেক ইসলাম মানিকনগর এলাকায় হাঁটুতে ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। মো. কবিরের গায়ে লক্ষীবাজারের ১৩-১৫ টি ছিটা গুলিবিদ্ধ হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রাকিব আবির অনেক গুলি ছিটা গুলিবিদ্ধ হয়। ফিনান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাগর হোসাইন আলাদিন চোখে, দাঁতে ও পায়ে ছিটা গুলিবিদ্ধ হয়। ইতিহাস বিভাগের নূর হাওলাদার যাত্রাবাড়ীতে হাতে-পায়ে গুলিবিদ্ধ ও মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত। মো. মানিক সাইনবোর্ড এলাকায় পিঠে রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়।

কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র শিহাব হাই কোর্টে গুলিবিদ্ধ হয় ও ২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের গোলাম রাব্বানি সরকার আহত হয়। কলেজের ইংরেজি বিভাগের২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওমর ফারক আহত হন।


সর্বশেষ সংবাদ