অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বয়কটের ঘোষণা বুটেক্স শিক্ষার্থীদের

ছবি
ছবি  © টিডিসি

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগত সংস্কারে শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত দাবিসমূহ না মানায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-ল্যাব-পরীক্ষা বয়কট করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম, ৪৮তম ও ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বয়কট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রচার করেন। অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ মেনে না নিলে, ক্লাসে আর ফেরত না আসার ঘোষণা দেন তারা।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি পেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ আলিমুজ্জামান বরাবর। দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিসহ ২০টি কমিটি গঠন করা হয় এবং প্রত্যেক কমিটির আলাদা আলাদা সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তবে সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো কমিটিই এখনো অর্পিত দায়িত্ব সম্পূর্ণ করতে পারেনি।

কমিটিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল সাপ্লিমেন্ট পরীক্ষা চালু সংক্রান্ত কমিটি। কমিটির কিছু কাজ দৃশ্যমান হয়েছিল। কিন্তু প্রতিনিধিদের দাবি, সংশ্লিষ্টরা দিনের পর দিন তাদের আশ্বাস দিয়ে আসছে কিন্তু দাবি আদায় আর হচ্ছে না এবং বারবার উপাচার্যসহ বিভিন্ন শিক্ষকদের সাথে আলোচনায় বসেও তারা কোনো ফল পাচ্ছে না। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবং অন্যান্য কমিটির দৃশ্যমান ফলাফল না দেখায় ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে ব্যাচভিত্তিক ক্লাস-ল্যাব-পরীক্ষা বয়কট এবং অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে ক্যাম্পাসে জড় হতে থাকে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে। নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দেয়ার পরও কোনো কমিটি তাদের কাজ পূর্ণ করতে পারেনি এবং এখনো সাপ্লিমেন্ট পরীক্ষা চালু নিয়ে বারবার মিটিং করার পরও কোনো সমাধানে আসা যায় নি।  আমাদের হস্তক্ষেপে নিজ নিজ ডিপার্টমেন্টের হেড ও ডিনের কাছ থেকে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে সাপ্লিমেন্ট ব্যাপারটা ফরওয়ার্ড করেছি। এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে সাপ্লি পাশও হয়ে যায়। কিন্তু সিন্ডিকেট মিটিংয়ে কেন এই ইস্যু তোলা গেলো না!’

তারা আরও বলেন, ‘আমরা এতদিন শ্রদ্ধার জায়গা থেকে ভিসির পদত্যাগ চাই নি, কিন্তু ভিসি স্যারের কাছ থেকে আমরা কিছু প্রশ্নের জবাব চাই। সিন্ডিকেট মিটিং আয়োজন করা একজন ভিসির অন্যতম দায়িত্ব, সেখানে অ্যাজেন্ডা তুলে পাশ করানোও দায়িত্ব ছিল কিন্তু সেখানে তিনি ব্যর্থ।’

এসব বিভিন্ন ইস্যুসহ সরকার পতনের পূর্ববর্তী সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে ভিসির অবস্থান ও শিক্ষার্থীদের নাম ডিবিতে দেয়ায় সংশ্লিষ্ট থাকাসহ স্বৈরাচারের দোসরদের সাথে একাত্মতা পোষণ করার ঘটনা উল্লেখ করে ‘ভিসির পদত্যাগ আমরা কেন চাইবো না’ ভিসির কাছে এই প্রশ্নের জবাব চান শিক্ষার্থীরা।

সাপ্লিমেন্ট পরীক্ষার কমিটির শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মাহিন সাফা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে একটি সাপ্লিমেন্ট পরীক্ষা কমিটি করা হয়। কমিটির দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফলে একটি খসড়া প্রস্তাবনা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে উঠানো হয় এবং সেখানে পাশও হয়ে যায়। পরবর্তীতে তা সিন্ডিকেট মিটিংয়ে উঠানোর কথা যেটা বাস্তবায়ন হয়নি। এবং অলরেডি সকল ব্যাচের রেজাল্ট দেয়া শেষ হয়ে গিয়েছে, অন্যদিকে সাপ্লির যে দাবি ছিল তার কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। তাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে এক ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তাই আজকের অবস্থান কর্মসূচিতে এবং যতক্ষণ না আমাদের দাবি আদায় না হয় ততক্ষণ আমরা শ্রেণিকার্যক্রমে ফিরবো না।’

আরও পড়ুন: মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি বুটেক্স ছাত্রলীগ

এ ব্যাপারে আরেক শিক্ষার্থী মুজাহিদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নাম ডিবিতে দেওয়া, আওয়ামী গোলামি করা, ২০টা কমিটির একটাও বাস্তবায়ন না করা, সাপ্লি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে পাশ হওয়ার পরও সিন্ডিকেট মিটিংয়ে পাশ না করানো ইত্যাদি কারণে ভিসি ব্যর্থ। জবাবদিহিতায় নিজ পক্ষের শিক্ষার্থী এনে আমাদের হেনস্তা করে পার পেয়েছেন, উনি বলছেন উনি আর স্টুডেন্টদের সাথে বসবেন না, উনি গেইট থেকে শফি ভাইর নাম সরাতে ব্যর্থ।’

মুজাহিদ আরো বলেন, ‘১৮ জুলাই যেখানে ছাত্ররা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন করেছিলো সেখানে ৪ আগস্ট কীভাবে উনি ছাত্রলীগের সভাপতিকে ছাত্রপ্রতিনিধি হিসেবে মিটিংয়ে ডাকেন, এতো কিছুর পরেও উনার পদত্যাগ আমরা কেনো চাইবো না। এর উত্তর ভিসি স্যার নিজে দিবেন।’

পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে সাপ্লিমেন্ট পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করতে হবে এবং গঠিত ২০টি কমিটির আপডেট জানাতে হবে। এসবের জন্য বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেওয়া হলো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence