আবাসন সংকট

মেস ও ভাড়া বাসায় থাকেন বেরোবির ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পার করেছে। তবে এখন পর্যন্ত আবাসন সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ক্যাম্পাসের মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ আবাসিক হলে থাকেন। বাকি ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী রংপুর শহরের মেস ও ভাড়া বাসায় থাকেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদের ২২টি বিভাগে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। এর বিপরীতে আবাসিক হলে আসন সিট রয়েছে মাত্র ৯৩৭টি। সে হিসেবে হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১২ শতাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে আবাসিক সংকটই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা বড় সমস্যা। নির্মাণকাজ থমকে থাকা ১০ তলা ভবন বিশিষ্ট শেখ হাসিনা হলসহ আবাসিক হল রয়েছে মাত্র চারটি। এর মধ্যে ছেলেদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সর্বাধিক সিট রয়েছে ৩০৪টি ও শহীদ মুখতার ইলাহী হলে ২৪০টি। আর মেয়েদের একমাত্র শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে আসন সংখ্যা ৩৪২টি।

আবাসিক সংকটের কারণে বাকি ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থীর থাকতে হচ্ছে মেস ও ভাড়া বাসায়। এ সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে গড়ে উঠেছে মেস বাণিজ্য। বিকল্প না থাকায় মেস মালিকদের স্বেচ্ছাচারী আচরণ সহ্য করেই থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা জানান, কেউ যদি দু-এক মাসের জন্য মেসে উঠতে চায় তাহলে তাকে তিন মাসের ভাড়া জামানত দিয়ে উঠতে হয়। এছাড়াও মিল প্রতিও গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা। যা শিক্ষার্থীদের কষ্টসাধ্য।

হলে সিট না পাওয়া একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আবাসিক হলে সিট না পাওয়া সত্যি অনেকটা আক্ষেপ ও খারাপ লাগার। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষের পথে হলেও সিট পাইনি। আবাসন সংকটের মূল কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনায় হল সংখ্যা অপ্রতুল। একই সঙ্গে হলে বৈধ পন্থায় সিট বণ্টনে রয়েছে প্রশাসনের উদাসীনতা ও যথাযথ উদ্যোগের অভাব। আমরা ছাত্র রাজনীতি করি না। এ জন্য হলের আবাসিক সুবিধাও পাই না।

আবাসিক হলে থাকা একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি রুমে চার জনের সিট থাকলেও  রাজনৈতিক নেতারা সেখানে  ৮-১০ জনের থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। এভাবে গাদাগাদি করে থাকার কারণে নষ্ট হচ্ছে পড়াশোনার পরিবেশ।

মুক্তার ইলাহী হলের আহাদ বলেন, এভাবে একবিছানায় দুজন থাকা খুবই কষ্টকর। ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। গাদাগাদি থাকার কারণে পড়াশোনা ঠিকমতো করতে পারি না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন, আবাসন সংকট সমস্যাটি আমাদের দীর্ঘদিনের। ৮-১০ হাজার শিক্ষার্থীর তুলনায় মাত্র কয়েকশ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে বিশেষ প্রকল্পের ১০ তলাবিশিষ্ট নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা ছাত্রী হল দুর্নীতি সংক্রান্ত নানা জটিলতায় স্থবির হয়ে পড়ে আছে। নতুন হল নির্মাণের উদ্যোগও গ্রহণ করতে দেখছি না আমরা। আবাসন সংকট দূর করতে নতুন হল নির্মাণের উদ্যোগ নিক প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, হল সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আমরা ইউজিসিকে জানিয়েছি। খুব শিগগিরই শেখ হাসিনা হলের কাজ শুরু হবে। তখন মেয়েদের আর বাইরে থাকতে হবে না। তাদের সমস্যা সমাধান হবে আশা করি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ বলেন, ভৌত অবকাঠামো সংকট নিরসনে একটি মেগা প্রকল্প প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটির অনুমোদন পেলে ভৌত অবকাঠামগত সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence