চক্রের কাছ থেকে দুই বিসিএস পরীক্ষার শত শত প্রবেশপত্রের ফটোকপি উদ্ধার 

  © সংগৃহীত

গত ১২ বছরে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) আওতাধীন ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার নিয়োগের অন্তত ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ প্রমাণ করতে গিয়ে সিআইডি প্রশ্নফাসেঁর প্রমাণ পায়। সিআইডি সূত্র জানায়, চক্রের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন থেকে প্রশ্ন ফাঁস সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। এ ছাড়া মিলেছে বেশ কিছু ডিজিটাল আলামত। তাদের কাছ থেকে দুটি বিসিএস পরীক্ষার শত শত প্রবেশপত্রের ফটোকপি পাওয়া গেছে। তবে কোন দুটি বিসিএস পরীক্ষার প্রবেশপত্র এ বিষয়ে কিছু জানায়নি সিআইডি।  

সিআইডি জানায়, পরীক্ষার্থীদের নিজস্ব ইউজার আইডি ও গোপনীয় পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করতেন চক্রের সদস্যরা। ফলে পরীক্ষার ফল বের হলে তারা সহজেই জেনে যেতেন কে কে পাস করেছে। এতে তাদের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী বাকি টাকা আদায় সহজ হতো।

এদিকে পিএসসির ভেতরে-বাইরে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিল চক্রটি। ফলে সুরক্ষিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করে প্রশ্ন বের করে আনা এবং টাকার বিনিময়ে তা পরীক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর কাজটি সুচারুভাবে সম্পন্ন হতো। নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তি করত তারা। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র, আইডি ও পাসওয়ার্ড থাকত চক্রের কাছে। যেন চাইলেও কোনো পরীক্ষার্থী তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে না পারেন। 

পিএসসির প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে রোববার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যানের চাকরিচ্যুত গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

তাদের মধ্যে পিএসসির উপপরিচালক আবু জাফর ও জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক আলমগীর কবির, ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলামকে বুধবার সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। 

এ ঘটনায় পল্টন থানায় দায়ের মামলায় আবেদসহ ছয়জন মঙ্গলবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে গ্রেপ্তার সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।


যেভাবে প্রশ্ন বাহিরে আসতো

তদন্ত সূত্র জানায়, পিএসসির সুরক্ষিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থেকে মূলত উপপরিচালক আবু জাফর ও জাহাঙ্গীর আলম প্রশ্ন বের করে আনতেন। এর পর সেই প্রশ্ন পেতেন সাজেদুল ইসলাম। তিনি আবেদ আলীকে টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র সরবরাহের পাশাপাশি দুই উপপরিচালকের পক্ষে তিনটি চক্র পরিচালনা করতেন। তাঁর সহযোগীরা টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন কিনতে আগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। কথা চূড়ান্ত হলে প্রার্থীদের সাজেদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হতো। এ ধরনের পরীক্ষার্থী সংগ্রহকারীদের অন্যতম ছিলেন খলিলুর রহমান। রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষায় তিনি ৯৮ জন প্রার্থী দেন। ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম ও পাসপোর্ট অফিসের কর্মী মামুনুর রশীদও পরীক্ষার্থী সংগ্রহ করতেন। এভাবে চুক্তিবদ্ধ সব প্রার্থীকেই বিভিন্ন স্থান থেকে মাইক্রোবাসে তুলে সাজেদুলের নির্ধারিত বাসা বা প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে নেওয়া হতো। এর পর সেখানেই তাদের প্রশ্নপত্র ও উত্তর দিয়ে মুখস্থ করতে বলতেন চক্রের সদস্যরা। 

 

সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence