বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ‘প্রক্টর সেবা’ চালু ড্যাফোডিলে

ডিআইইউ স্মার্ট প্রক্টর
ডিআইইউ স্মার্ট প্রক্টর  © টিডিসি সম্পাদিত

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) চালু হয়েছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রক্টর সেবা ‘ডিআইইউ স্মার্ট প্রক্টর’। আজ সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ সেবার উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘ডিআইইউ স্মার্ট প্রক্টর’ (https://aiproctor.daffodilglobal.ai/) শিক্ষার্থীদের নানাবিধ সমস্যা দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী সমস্যায় পড়লে সেবাটিতে জানালে তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেবে কীভাবে ও কোথায় সমস্যার সমাধান হবে, ফলে বিভিন্ন অফিসে ঘুরে সঠিক জায়গা বের করতে হবে না। জরুরি পরিস্থিতিতে এআই সিস্টেম সরাসরি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থা করবে, যাতে দ্রুত সহায়তা পৌঁছানো যায়।

প্রাথমিকভাবে এই সেবা সমস্যার ধরন অনুযায়ী সমাধানের পথনির্দেশ দেবে, তবে ভবিষ্যতে লোকেশনসহ তথ্য প্রেরণ করে প্রশাসনকে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর সুবিধাও যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে প্রযুক্তিটি নিয়মিতভাবে আপডেট ও উন্নত করা হবে।

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. শেখ মুহাম্মদ আল্লাইয়ার বলেন, পৃথিবী সৃষ্টি থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের কাজ একই রকমই আছে, শুধু মাধ্যম বদলেছে। আগে আমাদের বাবারা কেরানীর মাধ্যমে টাকা খরচ করতেন, এখন আমরা অনলাইনে করতে পারি। আয় করছি আর খরচ করছি—কাজ একই, শুধু মাধ্যম পরিবর্তন হচ্ছে।

আরও বলেন, ডিআইইউ স্মার্ট প্রক্টর হলো বাংলাদেশের প্রথম এ ধরনের সেবা, এবং আমরা এটি কপিরাইটের জন্যও জমা দিয়েছি। প্রক্টর সরাসরি বসে শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধান করে, আর এআই প্রক্টর হবে শিক্ষার্থী ও প্রক্টর অফিসের মধ্যে সহযোগিতার সেতুবন্ধন। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা নানা সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসে, কিন্তু দেখা যায় সমস্যার সমাধান আসলে অন্য অফিসে হয়। এআই প্রক্টরের মাধ্যমে শিক্ষার্থী আমাদের কাছে না এসেও শুধু সমস্যার কথা জানালে, সেখান থেকেই তাকে জানিয়ে দেওয়া হবে কীভাবে এবং কোথায় যেতে হবে সমস্যার সমাধানের জন্য। এতে শিক্ষার্থীর কাজ সহজে হয়ে যাবে, অফিসে ঘুরাঘুরি ছাড়াই।

ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে হুমকি হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে প্রক্টর বলেন, যেসব বিষয় ব্যক্তিগত বা গোপনীয়, সেগুলো এআই প্রক্টর নিজে সংরক্ষণ করবে না। বরং সরাসরি আমাদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেবে।

তিনি আরও বলেন, আমি আমার সব শিক্ষার্থীকে বলতে চাই যে এটি একটি নতুন জিনিস, তাই এর মধ্যে নতুনত্বও আছে, আবার কিছু সমস্যাও থাকতে পারে। আমরা সবাই যেন এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখি। এটি আমাদের নিজের শিক্ষার্থীরাই তৈরি করছে। যদি আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের পাশে না দাঁড়াই, তবে নতুন কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হবে না। পৃথিবীর কোনো প্রযুক্তিই শুরুতে সবাই ভালোভাবে নেয়নি, কিন্তু পরে সেগুলো মানুষের জীবনের অংশ হয়ে গেছে। আশা করি, এআই প্রক্টরও শিগগিরই সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠবে। আমরা এই সেবায় আরও উন্নতির জন্য কাজ করবো, যাতে দিনে দিনে শিক্ষার্থীরা আরও দ্রুত ও সহজে তাদের সমস্যা সমাধান করতে পারে।

নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও হয়রানি থেকে মুক্ত হবে বলে ধারণা সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এ বিষয়ে আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এইচ এম সাব্বির বলেন, পরিবর্তনের থেকে পরিমার্জনই শ্রেয়। এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে আমার ধারণা, যদি যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রযুক্তি-ভিত্তিক নিরাপত্তা ও সহায়তার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। 


সর্বশেষ সংবাদ