এনএসইউতে ‘দ্য মুন অ্যান্ড সিক্সপেন্স’ উপন্যাস নিয়ে আলোচনা সভা 

আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত  © সংগৃহীত

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (এসএইচএসএস) একটি ব্যতিক্রমধর্মী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) অনুষ্ঠিত এ সেশনের মূল বিষয় ছিল ব্রিটিশ সাহিত্যিক সমারসেট মমের উপন্যাস ‘দ্য মুন অ্যান্ড সিক্সপেন্স’ এবং এতে “আত্ম উপলব্ধির জন্য আত্মমগ্নতার অপ্রত্যাশিত প্রেরণা” বিষয়টি উঠে আসে।

এ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় এসএইচএসএস কনফারেন্স রুমে এবং এটি ছিল এসএইচএসএসের নিয়মিত ফ্যাকাল্টি সেমিনার সিরিজের অংশ। মূল বক্তা ছিলেন এনএসইউ’র অধ্যাপক ও ইনস্টিটিউশনাল র‍্যাংকিং সেলের পরিচালক ড. ফারুক এম. শেখ। সেশনটি সঞ্চালনা করেন এনএসইউ’র ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের পরিচালক ড. হালিমুর আর. খান। 

আলোচনার শুরুতেই এসএইচএসএস-এর ডিন অধ্যাপক রিজওয়ানুল ইসলাম উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন এবং ড. ফারুক এম. শেখের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘সাহিত্যিক ক্লাসিকগুলোর মাধ্যমে আমরা জীবনের গভীর প্রশ্নগুলো সম্পর্কে ভাবতে পারি, যা আমাদের জন্য আজও প্রাসঙ্গিক।’

ড. ফারুক এম. শেখ তাঁর বক্তব্যে উপন্যাসটির মূল চরিত্র চার্লস স্ট্রিকল্যান্ডের জীবন ভ্রমণের মাধ্যমে সুখ বা পরিপূর্ণতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। লন্ডনের আরামদায়ক জীবন ও সফল স্টক ব্রোকারের পরিচয় ছেড়ে দিয়ে স্ট্রিকল্যান্ড যাত্রা শুরু করেন একজন শিল্পীর আত্ম-উপলব্ধির উদ্দেশ্যে। প্যারিস, মার্সেই ও শেষমেশ তাহিতি দ্বীপে তিনি খুঁজে পান এক নির্মম, অথচ নির্মল শিল্পীজীবন—যেখানে কোনো স্বীকৃতি বা আর্থিক লাভের আকাঙ্ক্ষা নেই।

তার জীবনের চূড়ান্ত সৃষ্টিকর্ম ছিল একটি অদ্বিতীয় চিত্রকর্ম, যা তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলার পরেও রচনা করেন। মৃত্যুর আগে নিজ স্ত্রীকে তা ধ্বংস করে দিতে বলেন, যেন বোঝানো যায়, প্রকৃত শিল্পের সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে তার সৃষ্টির প্রক্রিয়াতেই—না যে স্বীকৃতিতে, না অর্থে।

সেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দার্শনিক ও নৈতিক দিক নিয়ে গভীর আলোচনা করেন। তারা জানতে চান, কেন স্ট্রিকল্যান্ড তাঁর সামাজিক জীবন ত্যাগ করেছিলেন, শিল্প ও সুখের মধ্যকার দ্বন্দ্ব, এবং এ উপন্যাসের ভাবনা আজকের সমাজে কতটা প্রাসঙ্গিক। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও গভীর প্রশ্নে সেশনটি হয়ে ওঠে অত্যন্ত প্রাণবন্ত।

অনুষ্ঠান শেষে অনেক শিক্ষার্থী বক্তার সঙ্গে থেকে উপন্যাসের আরও গভীরতর ব্যাখ্যা নিয়ে কথা বলেন। এই আয়োজন প্রমাণ করে, সাহিত্যিক আলোচনাগুলো তরুণ প্রজন্মকে ভাবতে শেখায় এবং আত্ম-অন্বেষণের পথে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এনে দেয়।

 


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!