সীমান্ত হত্যা বন্ধের উদ্যোগে ঘাটতি আছে : ইউআইইউতে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৪, ০৫:১১ PM , আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৪, ০৫:১১ PM
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সীমান্ত হত্যা বন্ধে যথাযথ উদ্যোগ নেই বলে মনে করেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে আন্তরিকতা থাকলে এটি বন্ধ করা সম্ভব। সেজন্য বাংলাদেশের আরও বেশি উদ্যোগী হওয়া দরকার।
রবিবার (২৪ মার্চ) বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: প্রতিবেশীর জন্য আদর্শ?’—শীর্ষক আলোচনা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। ইউআইইউ’র স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্সের উদ্যোগে উচ্চশিক্ষালয়টির ক্যাম্পাসে ‘বাংলাদেশ কর্পাস: পাবলিক লেকচার সিরিজ-২০২৪’ এর অংশ হিসেবে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছে।
সরকারের সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক বিগত ১৫ বছরে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে। এ সম্পর্ক উন্নয়ন এবং তার থেকে সর্বোচ্চ সুফল লাভে বাংলাদেশের আরও উদ্যোগী হওয়া দরকার।
তৌহিদ হোসেন বলেন, সীমান্ত হত্যা এটা বড় সমস্যা। এটি বন্ধে যথাযথ প্রতিশ্রুতি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না থাকায় সীমান্তে হত্যাকাণ্ড থামানো যাচ্ছে না। যদি সীমান্ত হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আওতায় আনা যায়, তাহলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
একবিংশ শতাব্দীর বিশ্ব একটি জটিল এবং সংবেদনশীল স্থান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তার গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। এর মধ্যে ভারতের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা, বিশেষ করে তার নিরাপত্তা উদ্বেগকে স্বীকৃতি দেওয়া অন্তর্ভুক্ত বলেও জানান তিনি।
যে কোনো সংজ্ঞায় ভারত আঞ্চলিক আধিপত্য এবং বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ক স্পষ্টতই আধিপত্যবাদী জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলছেন, ভবিষ্যৎ সম্পর্ক বিনির্মাণে প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের সাথে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সম্পর্কের প্রেক্ষিতও।
ভারতের সাথে সু সম্পর্ক রেখে তার থেকে সর্বোচ্চ স্বার্থ আদায়ে বাংলাদেশকে অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলোর সাথেও সম্পর্ক উন্নয়নের পরামর্শ সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিবের। তার মতে, এটা কখনো কখনো ভারতীয় স্বার্থের সাথে সংঘাতে পড়তে পারে।
তিনি চ্যালেঞ্জ দেখছেন ভারত ও চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের ভারসাম্য এবং ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার নিম্নগামী অগ্রযাত্রা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য সমস্যা তৈরি করার ক্ষেত্রে।
সেজন্য সমাধান হিসেবে তিনি দেখছেন, ভারতের সাথে ন্যায্য সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ শক্তি বৃদ্ধির বিষয়টিতে। তিনি মনে করেন, এই শক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, যা জাতীয় স্বার্থের ইস্যুতে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্মিত হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মুসা। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ডা. জুলফিকার রহমান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।