খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাবের চুক্তি নবায়ন করবে না ব্র্যাক
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:০১ AM , আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৫৫ AM
শিক্ষক আসিফ মাহতাবের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এ সেমিস্টারের প্রস্তুতিমূলক কাজে সময় ও প্রচেষ্টার জন্য তাকে পারিশ্রমিক প্রদান করা হবে। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সব মত ও আদর্শের জন্য সহনশীলতা ও সম্মানের ভিত্তিতে গঠনমূলক আলোচনা, বিতর্ক এবং পারস্পরিক মতবিনিময়ে বিশ্বাস করে। কিন্তু ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাতীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য আচরণ যা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সমর্থন করে না।
এতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে আসিফ মাহতাব উৎস কর্তৃক বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত সপ্তম শ্রেণির জাতীয় পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা ছেঁড়া এবং পাবলিক ফোরামে অন্যদেরকে একই কাজ করতে বলার ঘটনাটিকে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি একটি ধ্বংসাত্মক কাজ বলে মনে করে। এ ধরনের অশিক্ষকসুলভ আচরণকে ব্র্যাক কোনোভাবেই সমর্থন করে না।
ব্র্যাক শিক্ষক আসিফের সঙ্গে চুক্তি আর নবায়ন করবে না জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এ কারণে ব্যাক ইউনিভার্সিটি-২০২৪ সালের স্প্রিং সেমিস্টারের জন্য আসিফ মাহতাব উৎসকে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নতুন চুক্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ইউনিভার্সিটি মাহতাবকে এই সেমিস্টারের প্রস্তুতিমূলক কাজে তার সময় ও প্রচেষ্টার জন্য পারিশ্রমিক প্রদান করবে।
এতে আরও বলা হয়, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সকল ক্ষেত্রে দেশের সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং দেশের প্রচলিত বিধিবিধান মেনে চলার বিষয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তাই ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সমকামিতার প্রচার ও প্রসারের সাথে যুক্ত—সামাজিক মাধ্যমে কিছু মহলের এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তবে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি প্রত্যেকটি মানুষের সমান অধিকার এবং সম্ভাবনা বিকাশের পথে সমান সুযোগ সৃষ্টিতে বিশ্বাস করে।
এর আগে, গত ১৯ জানুয়ারি রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জাতীয় শিক্ষাক্রমের সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের দুটি পৃষ্ঠা ছিড়ে আলোচনায় আসেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস। এরপর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়।
ওই সেমিনারে আসিফ মাহতাব অভিযোগ করেন—সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে থাকা ‘ট্রান্সজেন্ডার’ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ‘মগজধোলাই’ করা হচ্ছে। এ সময় তিনি ওই বইয়ের ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ অধ্যায়ের ‘শরীফার গল্প’ অংশের পৃষ্ঠা ছিড়ে ফেলেন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টি খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে বরখাস্ত করে। তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) আসিফ মাহতাব উৎসের অনুসারীরা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেছে।