ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হলেন ‘ছাত্রলীগ কর্মী’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ০৪:৩৭ PM , আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫, ০৭:৫৯ PM
চট্টগ্রাম মহানগরে শহীদুল ইসলাম নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে স্বেচ্ছাসেবক দলের ওয়ার্ড আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৭ জুন) বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়। এতে ২১ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৪৮ জনকে সদস্য করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান কমিটি অনুমোদন করেন।
একই সঙ্গে নগরের চট্টগ্রাম মহানগরের আওতাধীন ১৫ থানার পূর্ণাঙ্গ ও ১২টি ওয়ার্ডের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়, যার মধ্যে উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডও রয়েছে। এটি নগরের আকবর শাহ থানার আওতাধীন।
এ বিষয়ে আকবর শাহ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাছির আহমেদ বলেন, ‘যারা মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন, কারাগারে ছিলেন, সেই ত্যাগীদের বাদ দিয়ে যাকে দলীয় কোনো মিছিল-সমাবেশে এলাকায় কেউ দেখেননি, তাকে করা হয়েছে আহ্বায়ক। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’
তিনি আরও বলেন, ‘দলের নিষ্ক্রিয় কর্মীকে আহ্বায়ক করলেও মনকে বোঝানো যেত। এমন একজনকে করা হয়েছে, যাকে সবাই চেনেন ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে। যার সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের অসংখ্য ছবি-ভিডিও রয়েছে।’
৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক রেহান উদ্দীন বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক করা হয়েছে যাকে, তাকে কখনো দলের মিছিল সমাবেশে দেখিনি। সবাই তাকে চেনেন ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে। নাম আসার পর থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। বিষয়টি দলের নগর ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে জানানো হয়েছে।’
৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আহ্বায়কের পদপ্রত্যাশী মোহাম্মদ রনি বলেন, ‘যখন এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেউ ছিল না, তখন মিছিল-সমাবেশে লোক নিয়ে যেতাম। নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-আপ্যায়ন সম্পাদক ছিলাম, তিন মামলার আসামি হয়েছি। অথচ যখন কমিটি ঘোষণা করা হয়, তখন নাম দেখি ছাত্রলীগ কর্মীর। এর চেয়ে কষ্টের আর কী হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দল আমাকে যোগ্য মনে না করলে পদ না দিলেও কোনো অসুবিধা নেই। দলের অন্য কাউকে দিক। কিন্তু ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত কাউকে পদ দেওয়া দলের জন্য কতটুকু সমীচীন?’
জানতে চাইলে ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব পাওয়া শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এলাকায় থাকতাম না, এ জন্য কেউ চেনে না। তবে মহানগরের মিছিল সমাবেশে থাকতাম।’
ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, সাবেক কাউন্সিলর জহুরুল আলমের সঙ্গে ছবি-ভিডিওতে থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো সামাজিক অনুষ্ঠানে তোলা ছবি, দলীয় কর্মসূচির না। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ১৬ বছরে সতর্কতার সঙ্গে ছিলাম, তাই আমাকে পুলিশ ধরতে পারেনি, মামলাও হয়নি। ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সখ্যের বিষয়টি সত্য নয়।’
ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি নিয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব জমির উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। একসঙ্গে অনেকগুলো কমিটি ঘোষণা হয়েছে। কোনো কারণে হয়তো কেউ ঢুকে যেতে পারে। তদন্তে প্রমাণিত হলে বাদ দেওয়া হবে।’