বিচার ও সংস্কার পেছানোর রাজনীতি করবেন না: নাহিদ ইসলাম

নাহিদ ইসলাম
নাহিদ ইসলাম  © সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে আমরা নাকি নির্বাচন পেছনের রাজনীতি করছি। যারা এই অভিযোগ করছে তাদেরকে আমরা পালটা বলতে চাই, আপনারা বিচার ও সংস্কার পেছনের রাজনীতি করবেন না। বিচার ও সংস্কারের প্রতি ঐক্যমত পোষণ করুন।

সোমবার (১০ মার্চ) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধা এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এনসিপির আয়োজনে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠন (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

নাহিদ ইসলাম বলেন, মব কালচারের রাজনীতি তৈরি করে বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমরা এসব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করব। যে যার জায়গা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাহায্য করব। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেব না।

তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা তার জন্য আমরা কারো ওপর নির্ভর হতে চাই না। সে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আমরা নিজেরাই মাঠে নেমেছি। রাজনৈতিক দল গঠন করেছি। আমাদের এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি দাবি হচ্ছে বিচার এবং সংস্কার। ৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের যে সরকার গঠিত হয়েছে এবং যারাই সামনে রাজনীতি করতে যাচ্ছেন তাদের সকলের ন্যায্যতার ভিত্তি হচ্ছে এই আহত যোদ্ধা এবং শহিদ পরিবাররা। ফলে তাদের মনের আকাঙ্ক্ষাটা আমাদের সকলকে বুঝতে হবে। শত শত মামলা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা মামলা করেছেন। আওয়ামী লীগের খুনিদের আসামি করে মামলা করা হয়েছে। তাদের বিচার করা ছাড়াই যদি নির্বাচনের মাধ্যমে আরেকটা সরকার ক্ষমতায় চলে আসে তাহলে কী নিশ্চয়তা আছে যে, আওয়ামী লীগকে আবার পুনর্বাসিত করা হবে না এই বাংলাদেশে? আমরা মনে করি ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তাদের রায় দিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট রাজনীতির আর জায়গা হবে না।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে আমরা নাকি নির্বাচন পেছনের রাজনীতি করছি। যারা এই অভিযোগ করছে তাদেরকে আমরা পালটা বলতে চাই, আপনারা বিচার ও সংস্কার পেছনের রাজনীতি করবেন না। বিচার ও সংস্কারের প্রতি ঐক্যমত পোষণ করুন।

তিনি বলেন, সরকারকে বলব, দ্রুত বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। কত দিনের মধ্যে কোন প্রক্রিয়ায় আমরা দৃশ্যমান বিচারের অগ্রগতি দেখতে পারব, দৃশ্যমান সংস্থার বাস্তবায়ন করতে পারব- তার সুস্পষ্ট রোডম্যাপ অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়ে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করেছিলাম। তিনিসহ অন্যান্য উপদেষ্টা এবং সেনাপ্রধান প্রত্যেকেই আমাদের কাছে অঙ্গীকার করেছিলেন, মানুষের জান মালের নিরাপত্তা এবং বিচারের দায়িত্ব আপনারা নিচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এবং সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে আওয়ামী লীগের ফায়সালা কী হবে? এই অঙ্গীকার থেকে তারা দূরে সরে যেতে পারবেন না। জনগণের সামনে তাদেরকে দাঁড়াতে হবে। আমরা করাই গন্ডায় জবাবদিহিতা নেব যে, আমাদের বিচার ও সংস্কার কতটুকু আদায় হলো। রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনের জন্য এতই তাড়াহুড়া করেন তাদেরকে কিন্তু ভোট চাইতে গেলে জনগণের সামনে কিন্তু তার জবাবদিহিতা দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আমরা সেটি ধরে রাখতে চাই। আমরা কেউ নির্বাচনের বিরুদ্ধে না। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে আমরা নিজেরা একটা রাজনৈতিক দল গঠন করেছি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সংবিধান অকার্যকর ও ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়ে আমরা একটি নতুন সংবিধান এই জাতিকে উপহার দিয়ে যাব ইনশাল্লাহ।


সর্বশেষ সংবাদ