ট্রাম্পের জয়ে প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে?
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৪ PM , আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৩ PM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হয়নি, তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রার্থিতা ঘোষণার পর থেকেই বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছেন এবং তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন। এরই মধ্যে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন এই রিপাবলিকান প্রার্থী।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) গভীর রাতে ফ্লোরিডায় উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের সামনে ভাষণ দেয়ার সময় এ ঘোষণা দেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দোদুল্যমান সাত রাজ্যের মধ্যে তৃতীয় রাজ্য হিসেবে পেনসিলভানিয়ার ফল প্রকাশ হয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের খবর অনুযায়ী, সেখানে জয় পেয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তার এ জয়ের মাধ্যমে ইলেকটোরাল কলেজের ২৬৭টি ভোট নিশ্চিত হলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হতে গেলে ইলেকটোরাল কলেজের ২৭০টি ভোট দরকার পড়ে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে। বিশেষ করে রিপাবলিকার প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ের ফলে কি ধরনের প্রভাব পড়তে পারে এ নিয়ে চলেছে নানা বিশ্লেষণ।
বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে অতীতে মার্কিন রাজনীতিকদের, বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক দেখা গেছে। ট্রাম্পের জয়ে বাংলাদেশের জন্য কী হবে? ভারতই বা এখানে কতটা ফ্যাক্টর হতে পারে? ড. ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন রাজনীতিদের সম্পর্ক কি কোন ভূমিকা রাখবে এই সম্পর্কে?
আরও পড়ুন: আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার আগেই ট্রাম্পকে মোদির শুভেচ্ছা বার্তা
যুক্তরাষ্ট্রের ইউলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং লেখক মাইকেল কুগেলম্যানের মতে, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দেশ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে দু’দেশের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে।
তিনি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমান সম্পর্কের কাঠামোকে সমর্থন করবেন, যেখানে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে উন্নয়ন, সংস্কার ও অন্যান্য সহায়তা বা সমর্থন করছে। ট্রাম্প ও তার প্রশাসন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রদানের ওপর জোর দেয়ার মত সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী হবে না।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস এঅ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেহনাজ মোমেনের মতে, সাধারণত আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট বদল হলেও বৈদেশিক নীতিতে খুব বড় পরিবর্তন হয় না। এর পিছনে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা বা কাঠামোগুলোর একটা শক্তিশালী ভূমিকা থাকে। কিন্তু ট্রাম্পকে আমরা দেখেছি কিছু প্রচারণায় ইনস্টিটিউশনকে বদলে দেয়ার কথা বলছেন। সেটা হলে একটা বড় পরিবর্তন হতে পারে
সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত একটি টুইট আলোচনা সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশে। তবে বিশ্লেষকেরা এটিকে ভবিষ্যৎ নীতির চেয়ে নির্বাচনে আমেরিকার হিন্দু ভোটার টানার রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই দেখছেন।
এদিকে বাংলাদেশে বিগত নির্বাচনের গ্রহণযেগ্যতা নিয়ে আমেরিকা প্রথমে শক্ত অবস্থানে থাকলেও পরবর্তীতে বাংলাদেশের সরকারের প্রতি ভারতের সমর্থনই একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হতে যাওয়ায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহযোগিতার জায়গা কমে আসার আশঙ্কা দেখছেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির। এছাড়াও বেআইনি অভিবাসীদের বের করে দেয়ার যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী- সেটিও একটি আশঙ্কার বিষয়।
তবে বাংলাদেশে ও আমেরিকার স্বার্থের জায়গা হচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্য, কৌশলগত, ভূরাজনৈতিক, এমন নানা দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা সম্পর্কে আগ্রহের জায়গা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নিজেদেরকে বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা