শখ করেও চিঠি লিখে ডাকবাক্সে পাঠাতে পারি প্রিয়জনদের ঠিকানায়

ডাকবাক্সে এখন আর চিঠি আসে না
ডাকবাক্সে এখন আর চিঠি আসে না  © ফাইল ছবি

ভোরের আলো ফুটতেই ডাকহরকরা বেরিয়ে পড়তেন সাইকেলে বা কাঁধে বস্তা নিয়ে। বস্তার ভেতর থাকতো প্রিয়জনদের চিঠির জীবন্ত সব অনুভূতি, আবেগ, ভালোবাসা বা আর্তনাদ। মানুষ অধীর অপেক্ষায় বসে থাকতো পথ চেয়ে কখন আসবে প্রিয়জনের চিঠি?

ডাকপিয়নের সাইকেলের  টুংটাং পরিচিত শব্দে সে সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতো। আজও ডাকবাক্স আছে, ডাকপিয়নও আছে, নেই শুধু চিঠি। ডাকবাক্সগুলো করুন চোখে দাঁড়িয়ে আছে কালের বিবর্তনের সাক্ষী হিসেবে।

এক যুগ আগেও যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল চিঠি। ছেলে চিঠি লিখতো মাকে, স্বামী স্ত্রীকে, প্রবাসী নিজের পরিবারকে, প্রেমিক প্রেমিকাকে। আজ আর কেউ চিঠি লেখে না। চিঠির কলমের কালিতে মিশে থাকে না প্রেম-ভালোবাসা, দুঃখ-বেদনা বা অব্যক্ত সব অনুভূতি। কাউকে এখন গভীর উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা পোষে পথ চেয়ে বসে থাকতে হয় না।

বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির সুবাদে ‘বাতির নিচে অন্ধকার’ এর মতো আড়ালে চলে গেছে চিঠির যুগ। চিঠিকে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে সাহিত্য। আমরা এখনো শুনি ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’, ‘চিঠি লিখেছে বউ আমার ভাঙা ভাঙা হাতে’র মতো আবেগ মিশ্রিত গান।

চিঠির আদলে রচিত হয়েছে রবিঠাকুরের গল্প স্ত্রীর পত্র, কাজী নজরুল ইসলামের লেখা বাঁধনহারার মতো পত্রোপন্যাস। কবি জীবনানন্দ দাশের অপ্রকাশিত চিঠিপত্রও সাহিত্যের অন্যতম লেখনী।

পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। কল্পনার গতির থেকেও দ্রুত গতিতে টুং শব্দে চলে আসে মেসেজ, ফোনকল বা ফোনের স্ক্রিনে ভেসে ওঠে প্রিয়জনের মুখ। যোগাযোগ করতে বেগ পেতে হয় না। সরকারি-বেসরকারি কাজেও এখন ব্যবহৃত হচ্ছে ইন্টারনেট, ইমেইল, স্মার্টফোন।

১ সেপ্টেম্বর ‘বিশ্ব চিঠি লেখা দিবস’ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আমরা শখ করে হলেও চিঠি লিখে ডাকবাক্সে পাঠাতে পারি প্রিয়জনদের ঠিকানায়। তাতে সময়ের বিবর্তনে হারানো ‘চিঠির যুগ’র স্বাদ কিছুটা হলেও আস্বাদন করা যেতে পারে।

লেখক: সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence