মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতায় আটকা সেসিপের চূড়ান্ত সুপারিশ

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক পাঠদান করছেন
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক পাঠদান করছেন  © ফাইল ফটো

সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ পেয়েছেন রাশেদ মোশাররফ। প্রাথমিক সুপারিশের প্রায় তিন মাস হতে চললেও চূড়ান্ত নিয়োগ হয়নি তার। এই অবস্থায় চরম হাতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন রাশেদ।

রাশেদ মোশাররফ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রায় পাঁচ মাস আগে সেসিপের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। প্রাথমিক সুপারিশের তিন মাস হতে চলেছে। তবে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না মেলায় চূড়ান্ত সুপারিশ হয়নি। পরিবারের সদস্যরা প্রতিদিন জিজ্ঞেস করেন কবে যোগদান করবো। তাদের কোনো উত্তর দিতে পারিনা। বিষয়টি নিয়ে মানসিক যন্ত্রণায় রয়েছি। 

শুধু রাশেদ মোশাররফ নন; সেসিপের গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ পাওয়া ১৬৯ শিক্ষকের ভাগ্য এখন ঝুলে আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাতে। পুলিশ ভেরিফিকেশন চলমান রেখে যোগদানের অনুমতি না মেলায় এসব প্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশপত্র দিতে পারছে না বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। প্রার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতায় তাদের নিয়োগ আটকে আছে।

‘গত ১৯ নভেম্বর আমরা এনটিআরসিএ’র চিঠি পেয়েছি। এই চিঠিতে মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে। সম্মতি পাওয়ার পর দ্রুত এনটিআরসিএকে অবহিত করা হবে’—মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ, উপসচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সেসিপের গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্তদের চূড়ান্ত সুপারিশের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রার্থীদের নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হবে।’

জানা গেছে, চলতি বছরের ১১ জুন সেসিপের আওতাধীন বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৪৭ শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। আবেদনগ্রহণ শেষে গত ১০ আগস্ট ১৬৯ প্রার্থীকে নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ করা হয়। নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্তদের সনদ যাচাই ও পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণ শুরু হয় ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে।গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম জমা শেষ হয়।

পরবর্তীতে পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম যাচাই-বাছাই করে এনটিআরসিএ। এই প্রক্রিয়া শেষে ৭২ জনকে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশের অনুমতি চেয়ে গত ১৬ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। গত ১৯ নভেম্বর সেই চিঠি পায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। তবে নানা অজুহাতে চিঠির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো: রবিউল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে বেসরকারি মাধ্যমিক-২ শাখায় যোগাযোগ করতে পারেন।’

এনামুল কাদের খান, চেয়ারম্যান, এনটিআরসিএ

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-২) মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘গত ১৯ নভেম্বর আমরা এনটিআরসিএ’র চিঠি পেয়েছি। এই চিঠিতে মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে। সম্মতি পাওয়ার পর দ্রুত এনটিআরসিএকে অবহিত করা হবে।’

এদিকে প্রাথমিক সুপারিশের প্রায় তিন মাস হতে চললেও এখনো চূড়ান্ত সুপারিশ না হওয়ায় হতাশায় ভুগছেন নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্তরা। যোগদান করতে না পারায় অসহায় অবস্থায় জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। এই অবস্থায় দ্রুত চূড়ান্ত সুপারিশের দাবি জানিয়েছেন তারা।

মাজেদুল ইসলাম নামে এক প্রার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের প্রাথমিক সুপারিশের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো চুড়ান্ত সুপারিশ করা হয়নি। এনটিআরসিএ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অজুহাত দিচ্ছে। আর মন্ত্রণালয় মন্ত্রী-সচিবের অজুহাত। অথচ চূড়ান্ত সুপারিশ না পাওয়ায় আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। এছাড়া সেসিপের প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক সংকট রয়েছে। এই সংকট দূর করতে দ্রুত চূড়ান্ত সুপারিশ করা দরকার।

মো. রাশেদ মোশাররফ জানান, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার পরও সেসিপ এর প্রাথমিক সুপারিশ পাওয়ার কারণে আমি যোগদান করিনি। দীর্ঘদিন ধরে বেকার থাকায় মানবেতর  জীবনযাপন করছি। দীর্ঘদিন কারিগরি শিক্ষায় নিয়োগ না হওয়ার কারণে ও কারিগরি শিক্ষায় ট্রেড  ইন্সটাকটরের  প্রচুর ঘাটতি রয়েছে, যা  শিক্ষার জন্য হুমকি স্বরূপ। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত চূড়ান্ত সুপারিশের দাবি জানাচ্ছি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা সচিব সোলেমান খানের ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তার কোনো উত্তর মেলেনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence