জাহালমকে ক্ষতিপূরণের পাঁচ লাখ টাকা দিলো ব্র্যাক ব্যাংক
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:৫১ PM , আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:৫১ PM
ঋণ জালিয়াতির ২৬ মামলায় জড়ানোর ঘটনায় পাটকল শ্রমিক জাহালমকে ক্ষতিপূরণের ৫ লাখ টাকা টাকা পরিশোধ করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। সাত দিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের নির্দেশের তিন দিনের মধ্যেই এটি পরিশোধ করেন।
বৃহস্পতিবার টাকা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্র্যাক ব্যাংকের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী জাহালমকে আজকে ৫ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতকে জানানো হবে।’
এর আগে, গত সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত সাত দিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে আগামী ৩১ অক্টোবর এ বিষয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দেয় চেম্বার আদালত।
আরও পড়ুন: গ্রুপ অ্যাডমিনদের প্রশিক্ষন দেবে ফেসবুক, সঙ্গে ৪০ লাখ টাকার অনুদান
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি জানান, দুদকের মামলায় বিনা অপরাধে তিন বছর জেল খাটা জাহালমকে সাতদিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দিতে ব্র্যাক ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালত। জাহালমকে সাতদিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার শর্তে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্য অর্থ পরিশোধ না করা হলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
জাহালম যেভাবে মুক্তি পান
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন আইনজীবী বর্তমান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারের অমিত দাশগুপ্ত।
তখন বিষয়টি আমলে নিয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করে হাইকোর্ট। পাশাপাশি জাহালমকে কেন মুক্তির নির্দেশ দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুলও জারি করে আদালত।
ওই রুলের শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেয় এবং দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চায়। সে আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা আকারে তা উপস্থাপন করে।
পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফআইআর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দিতে দুদককে নির্দেশ দেয়।
এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট ২০২০ সালের ১৭ এপ্রিল জাহালমকাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুদকের প্রতিবেদন চায়। পরবর্তীতে এসব মামলায় দুদক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়।
২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ওই রুলের ওপর শুনানি হয়। পরবর্তীতে একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায়ে ব্র্যাক ব্যাংককে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ব্রাক ব্যাংক।