নীলক্ষেতে আগুনে পুড়লো কোটি টাকার বই

নীলক্ষেতে আগুন
নীলক্ষেতে আগুন   © সংগৃহীত

নীলক্ষেতের বইয়ের মার্কেটে আগুন পুড়েছে কোটি টাকার বই। প্রায় এক ঘণ্টার আগুনে নিঃস্ব হয়ে যান অনেক ব্যবসায়ী। পুঁজি হারিয়েছেন অনেকেই। রাত পৌনে আটটায় লাগা আগুনে পুড়ে গেছে অর্ধশতাধিক দোকান। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

মঙ্গলবার রাতে আগুনের সূত্রপাত হয়। বইয়ের মার্কেটের পশ্চিম পাশে আগুন লাগার পর একপর্যায়ে তা ছড়িয়েছে দুই পাশেই।

নীলক্ষেতের বইয়ের বাজারে উচ্চমাধ্যমিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার বই, বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা গল্প–উপন্যাসের বই, ফটোকপির দোকান ও তেহারির দোকান রয়েছে। করোনার ক্ষতি কাটিয়ে সবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিলেন রাজধানীর নীলক্ষেতের বই ব্যবসায়ীরা। এই সময়ে এই আগুন ব্যবসায়ীদের আরো নিঃস্ব করে দিলো।

আরও পড়ুন: ৭৮ পদে নিয়োগ দেবে বিএডিসি

কীভাবে এই আগুন লেগেছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, একটি দোকানে শাটারমিস্ত্রি কাজ করছিলেন। সেখান থেকে প্রথমে আগুনের ফুলকি দেখা যায়। এ সময় একজন দোকানি চিৎকার করে ওই দোকানের বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু চোখের পলকে দোকানে আগুন ধরে যায়।

দোকানিদের অভিযোগ, ফোন দেয়ার পর প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট এসেছে শুধু একটা। এরপর আরও কয়েকটা আসলেও তারা শুধু ওপর থেকে পানি ছিটিয়েছে। মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রচুর মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়। কিছুক্ষণ পরপর পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস তাদের বাঁশিতে ফু দিয়ে, হ্যান্ড মাইকে বলেও মানুষের ভিড় কমাতে পারেনি।

সোহেল লাইব্রেরীর মালিক সোহেল দোকানের ফেসবুক পেইজে লেখেন, আমি শেষ। সব পুড়ে গেছে।

সংলাপ বই ঘরের মালিক কামাল উদ্দিনের স্ত্রী নুর জাহান বেগম বলেন, আমার সংসার এই দোকানের ওপর। এটার যদি কিছু হয়ে যায় আমার আর কিছুই থাকবে না।

নীলক্ষেতে বই সরবরাহ করা আবদুল জলিল জানান, বাবুল বুক কর্নার, রাজু বুক সেন্টার, চারুকলা, গীতাঞ্জলি, ফ্রেন্ডস বুক কর্নার, তপন লাইব্রেরি, সোহেল লাইব্রেরি, মিন্টু লাইব্রেরি, মায়ের দোয়া লাইব্রেরি, ইব্রাহিম বই ঘর, আমির বুক সেন্টারসহ আরও কয়েকটা দোকানের সব বই পুড়ে গেছে। একটা বইও বের করা যায়নি।

অল্প কদিন আগে ১২ লাখ টাকার বই তুলেছেন তপন বুক স্টোর। একটা বইও বের করে আনতে পারেননি। কাছেই সড়ক বিভাজকের ওপর মো. ফিরোজ নামের একজন তরুণ বই ব্যবসায়ীকে চোখের পানি মুছতে দেখা যায়। তিনি গোটা তিরিশেক বই রক্ষা করতে পেরেছেন। এভাবে বইয়ের সাথে পুড়ে গেছে অনেকের স্বপ্ন।

আরও পড়ুন: জাবিতে ভর্তি ফরমের ৮ কোটি টাকা ভাগ-ভাটোয়ারা, আজ যাচ্ছে ইউজিসি

মঙ্গলবার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকলেও বইয়ের মার্কেট এদিন খোলা ছিল বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। কয়েকজন দোকানমালিক জানান, করোনায় দীর্ঘদিন মার্কেট বন্ধ থাকায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিয়ে মার্কেট মঙ্গলবারেও খোলা রাখা হয়। আগুনে পোড়ার পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে দেয়া পানিতেও ভিজে গেছে অনেক বই।

২০১৭ সালেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল দেশের সবচেয়ে বড় বইয়ের বাজার নীলক্ষেতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজের পাশের এই মার্কেটটিতে সব সময়ই শিক্ষার্থীদের ভিড় থাকে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence