বাংলাদেশে ‘ফগ অ্যালার্ট’ জারি, এই সতর্কতার অর্থ কী?

ফগ অ্যালার্ট
ফগ অ্যালার্ট  © সংগৃহীত

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করে দিয়েছে যে, সারা দেশের নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোয় বুধবার দুপুর পর্যন্ত তীব্র কুয়াশা থাকবে। ফলে দৃষ্টিসীমা ৫০০ মিটার বা তার নীচে কমে যেতে পারে। বুধবার ভোর পাঁচটা থেকে শুরু হয়ে দুপুর একটা পর্যন্ত ঘন বা মাঝারি ধরনের কুয়াশা থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বুধবার দুপুর একটা পর্যন্ত এই সতর্কবার্তা কার্যকর থাকবে। আবহাওয়াবিদদের ভাষায়, একে 'ফগ অ্যালার্ট' বা কুয়াশার সতর্কবার্তা বলা হয়।

ফগ অ্যালার্ট কী?

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলছেন, যখন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা এক হাজার মিটারের নীচে নেমে আসে, কুয়াশার তীব্রতা বেশি থাকে, তখন সাধারণত আমরা ফগ অ্যালার্ট জারি করে থাকি। এ ধরণের সতর্কবার্তার মাধ্যমে মূলত যানবাহন চলাচলে বিশেষ সতর্কতা নিতে বলা হয়। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোয় কুয়াশার তীব্রতা বেশি থাকে। কুয়াশার কারণে যেহেতু বেশি দূর পর্যন্ত দেখা যায় না, ফলে যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষের ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষ করে নদীতে যেসব যাত্রী বা পণ্যবাহী যান চলাচল করে, সেগুলোর জন্য এই ঝুঁকি আরও বেশি থাকে। ফলে ফগ অ্যালার্ট জারি করা হলে তাদের স্বল্পগতি বা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে বলা হয়।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলছেন, কুয়াশা বেশি থাকলে বিমান চলাচলেও সমস্যার তৈরি হয়। এই কারণে সিভিল এভিয়েশনের জন্য আবহাওয়া দপ্তরের আলাদা একটি বিভাগ আছে, যারা প্রতি আধাঘণ্টা পরপর কুয়াশার সর্বশেষ তথ্য জানাতে থাকে। বাংলাদেশে শীতের সময়কালে, অর্থাৎ ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে 'ফগ অ্যালার্ট' জারি করা হয়। ঘন কুয়াশার কারণে গত কিছুদিন ধরেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

আরও পড়ুন- করোনার রেড জোনে আরও ১০ জেলা

কুয়াশা কিভাবে সৃষ্টি হয়?

কুয়াশাকে আবহাওয়াবিদরা 'লো ক্লাউড' বলে বর্ণনা করে থাকেন। শীতের সময় তাপমাত্রা কম থাকে এবং মাটিতে থাকা আদ্রতা উপরে উঠে গিয়ে কুয়াশা তৈরি করে। এছাড়া "অ্যাডভেকশন ফগ" বা মাটির তুলনায় বাতাস উষ্ণ এবং আদ্রতা বেশি থাকার কারণে যে কুয়াশা তৈরি হয়ে ভেসে বেড়ায়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ও আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ শাহ আলম বিবিসিকে বাংলাকে বলেছিলেন, কুয়াশা তৈরির পেছনে বাতাসের আদ্রতা ও তাপমাত্রার পার্থক্য দায়ী থাকে। তবে এবার রাতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার আগেই কুয়াশা তৈরি হয়ে যাচ্ছে। আর বাতাস কম থাকার কারণে কুয়াশা সরে যেতে পারছে না।

আরও পড়ুন- ভিসির পদত্যাগে শিক্ষার্থীদের দেয়া আল্টিমেটাম শেষ হচ্ছে ১২টায়

"কুয়াশা আইসের (বরফের) একটা অংশ। এটা আমাদের দেশে ছোট থাকে, অন্যান্য দেশে তাপমাত্রা অনেক কমে যায় বলে সেটা বড় আকার ধারণ করে ঝড়ে পড়ে, যাকে স্নো বলে। আমাদের দেশে তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকে বলে স্নো হয় না, তবে মাঝে মাঝে বৃষ্টির মতো ছোট ছোট ফোটা হয়ে ঝড়ে পড়ে," মিস্টার আলম বলেন। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং চীনেও কুয়াশা তৈরি হয়।

সূত্র: বিবিসি বাংলা


সর্বশেষ সংবাদ