একসাথে পরিবারের ৫ সদস্যকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তামান্না

  © সংগৃহীত

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার আটিপাড়া এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটিকে বরিশাল থেকে ঢাকাগামী একটি কাভার্ডভ্যান এসে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের পাঁচজন ও অ্যাম্বুলেন্স চালক নিহত হন। গত বুধবার সকালে এমন দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- ঝালকাঠির সদর উপজেলার বাউকাঠি গ্রামের মৃত সিরাজের ছেলে আরিফ (৩৫), আরিফের মা কহিনুর বেগম (৬৫), বোন সিএমএইচের নার্স শিউলি বেগম (৩০), ভাই তারেক (২৫), শ্যালক নজরুল ইসলাম (৩০) ও অ্যাম্বুলেন্স চালক কুমিল্লার আলমগীর হোসেন (৩৫)।

জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ঝিলমিল আক্তার মরিয়মকে বাড়িতে রেখে ঢাকায় বড় ভাই আরিফের সঙ্গে একটি গার্মেন্টসে চাকরিতে যোগ দেন তারেক। এর পর ২০ আগস্ট নিজ বাড়িতেই তার স্ত্রী কন্যা সন্তান প্রসব করেন। এদিকে বড় ভাই আরিফের স্ত্রী তামান্না আক্তারও অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বিয়ের ১০ বছর পর গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার উত্তরার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে তারও একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। জন্মের পর শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলেও বাচাঁনো যায় নি তাকে। গত মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি।

এ ঘটনায় গত বুধবার সকালে স্ত্রী তামান্নাকে হাসপাতালে রেখে আরিফ শিশুটির মরদেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সযোগে গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাউকাঠির উদ্দেশ্যে রওনা হন। এতে অ্যাম্বুলেন্সে সাথে পরিবারের পাঁচজন সদস্যও ছিল। এ পর্যায়ে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার আটিপাড়াে এলাকায় এসে তাদের অ্যাম্বুলেন্সের সাথে যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। পরে বরিশাল থেকে ঢাকাগামী একটি কাভার্ডভ্যান এসে চাপা দেয়। এতে অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য মারা যায়।

এদিকে নিহত আরিফের স্ত্রী তামান্নাকে সকালে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আনা হয়েছে। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি। একসঙ্গে পাঁচজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার বর্ণনা দেন নিহত আরিফের জ্ঞাতি নানা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আব্দুল মান্নান। তিনি জানান, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মরদেহগুলো হস্তান্তরের পর ভোর ৪টায় বাড়িতে আনা হয়। ঝালকাঠির বাউকাঠি গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে কহিনুর, আরিফ, তারেক ও নবজাতক শিশু সন্তানকে দাফনের প্রস্তুতি চলছে। শিউলি বেগমকে সেনাবাহিনীর বিভাগীয় প্রক্রিয়া শেষে শ্বশুরবাড়িতে হস্তান্তর করা হবে। সদর উপজেলার নৈয়ারী গ্রামে নজরুলকে তার নিজ বাড়িতে ও অ্যাম্বুলেন্স চালক আলমগীর হোসেনকে কুমিল্লার নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence