গণসাক্ষরতা অভিযান

পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ট্যাব দেওয়া প্রয়োজন

  © সংগৃহীত

অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয় রোধ করে শিক্ষার অর্জন ধরে রাখা এবং শিক্ষাকে এই সময় এগিয়ে নিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে গণসাক্ষরতা অভিযান। বেসরকারি এ সংস্থাটর মতে, আগামী দিনের শিক্ষা হবে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। তাই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আইসিটি সহায়ক কারিকুলাম ও টেক্সট বই, শিক্ষা সহায়ক উপকরণ প্রণয়ন ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ট্যাবলেট বা যুগোপযোগী অন্য কোনও আইসিটি ডিভাইস পায়, সেই বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

আজ বুধবার (৩ জুন) প্রাক-বাজেট ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবির পাশাপাশি বাজেট ব্যবস্থাপনায় অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতা বাড়ানো, আর  অর্থ ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করারও দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিগত দুই দশকে শিক্ষায় আমাদের অগ্রযাত্রা সমুন্নত রাখার জন্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে এখনই একটি শিক্ষা পুনরুদ্ধার কার্যক্রম হাতে নেওয়া প্রয়োজন।

শিক্ষা পুনরুদ্ধারে বিশেষ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, করোনা ঝুঁকি প্রশমন ও এডুকেশন রিকভারি কার্যক্রমের আওতায় বর্তমান অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দসহ কমপক্ষে দুই-তিন বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। বিশেষ পরিকল্পনায় পাঠদান, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া, শিক্ষক ও অভিভাবকদের আশ্বস্ত করা, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলো বাদ দেওয়া ও পাঠদানের রুটিন সমন্বয় করা আবশ্যক।

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী দিনের শিক্ষা হবে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। এইজন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যালয় পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ অত্যন্ত জরুরি। তাই এ খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের বিকল্প নেই। 

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে আন্তঃপ্রতিষ্ঠান সমন্বয় করার উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়— বিটিআরসি, এটুআই, আইসিটি বিভাগ, এনসিটিবি, ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী সংস্থা, মোবাইল অপারেটর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবা প্রদানকারী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থাপনার একটি সুদৃঢ় ভিত্তি তৈরি করতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ প্রয়োজন।

আইসিটি সহায়ক কারিকুলাম ও টেক্সট বই, শিক্ষা সহায়ক উপকরণ প্রণয়ন ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন ট্যাবলেট বা যুগোপযোগী অন্য কোনও আইসিটি ডিভাইস পায়, সেই বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষকের ক্লাসে যেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও অংশ নিতে পারে, সেই লক্ষ্যে ইন্টারনেটের নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ ও সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ থাকতে হবে।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য গণসাক্ষরতা অভিযানের সহ-সভাপতি আরমা দত্ত, সহ-সভাপতি ড. মনজুর আহমেদ ও উপ-পরিচালক কে এম এনামুল হক, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের নির্বাহী পরিচালক ড. এহছানুর রহমান, ব্র্যাকের পরিচালক (শিক্ষা কর্মসূচি) ড. শফিকুল ইসলাম, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের রিসার্চ ডিরেক্টর ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ