রাজশাহীর পবায় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এক বছর ধরে বন্ধ, ভোগান্তিতে রোগীরা
- রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১০:১০ PM , আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১০:১০ PM
রাজশাহীর পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি এক বছর ধরে বন্ধ পড়ে আছে। কোনো সরকারি ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া এ কার্যক্রমের ফলে বিকেলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। তারা এখন বাধ্য হয়ে বেশি খরচ দিয়ে বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতালে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
রাজশাহী সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, শুধু পবায় নয়, সারা দেশেই বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এটি চালু করতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন রিফর্ম প্রয়োজন।
পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন সকালে আউটডোরে মাত্র দুই টাকার টিকিট কেটে অন্তত ৭০০ রোগী চিকিৎসা নেন। তবে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সরকারি উদ্যোগে বৈকালিক সেবা ২০০ টাকায় চালুর পর প্রাথমিকভাবে রোগীদের সাড়া পাওয়া গেলেও কয়েক মাসের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়। এপ্রিল মাসে রোগী ছিলেন ৭২ জন, মে মাসে ৯৪ জন, জুনে ৮৮ জন এবং জুলাইয়ে ৭৬ জন। এরপর হঠাৎই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের মাঠে গরু চরছে, প্রধান ফটকের পাশে বাঁধা রয়েছে পাঁচটি গরু। জরুরি বিভাগে কোনো চিকিৎসক উপস্থিত না থাকলেও চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারী দায়িত্ব পালন করছেন। বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবার ভবনে তালা ঝুলছে, বন্ধ কাউন্টারও দেখা গেছে।
হাসপাতালের নাম প্রকাশ না করা এক কর্মচারী জানান, বৈকালিক সময়ে চিকিৎসকরা উপস্থিত থাকেন না। শহরের বেসরকারি হাসপাতালে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়ায় তারা নিজেরাই এখানে বসা বন্ধ করেছেন। ফলে ৫ আগস্টের পর থেকে এখানে আর কোনো চিকিৎসক পাওয়া যাচ্ছে না।
রোগীরা বলছেন, বৈকালিক চিকিৎসা বন্ধ থাকায় তাদের এখন বেশি খরচ দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। পবা উপজেলার এনামুল হক বলেন, ‘আগে বিকেলে এখানে কম খরচে ভালো ডাক্তার দেখাতেন। এখন না থাকায় আমাদের মতো গরিবদের চিকিৎসা করানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’
এ বিষয়ে পবা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘আমি আসার পর থেকেই এটি বন্ধ দেখেছি। কীভাবে বন্ধ হয়েছে, সেটিও আমি বলতে পারব না। তবে এটি যে এখানে চালু ছিলো সেটিও আমি জানি না।’
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, শুধু পবাতেই নয়, সারা দেশেই এটি বন্ধ আছে। রোগী আসেন না, তাই এটি বন্ধ।
সরকারিভাবে এটি বন্ধ করেছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারিভাবে এটি বন্ধ করা হয়নি। তবে এটি চালু করতে বা জনপ্রিয় করতে সরকারের পক্ষ থেকে রিফর্ম করা দরকার। তবেই এটি আবারও চালু হবে।